সিএবি : উত্তপ্ত মণিপুর, সংবাদ সম্প্রচারে বাধানিষেধ, সান্ধ্যআইন জারি, রাজ্যপালের নির্দেশে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা

ইমফল, ১২ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ বাতিলের দাবিতে চলমান প্রতিবাদী জঙ্গি-আন্দোলন সংক্রান্ত কোনও খবর সংবাদ মাধ্যমে সম্প্রচার এবং প্রকাশ করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্যের দুই জেলা প্রশাসন ইমফল পূর্ব ও ইমফল পশ্চিম। তাছাড়া গতকাল সোমবার মধ্যরাত থেকে এই দুই জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সান্ধ্যআইন জারি করেছেন যথাক্রমে পূর্ব ইমফলের জেলাশাসক চিত্রা দেবী এবং পশ্চিম ইমফলের এন প্রবীণ সিং। এরই মধ্যে আজ মঙ্গলবার বিকেলে খোদ রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লার নির্দেশে রাজ্যের সব মোবাইল ও ডাটা সার্ভিস বন্ধ করা হয়েছে। ফলে রাজ্যের ইন্টারনেট-সহ মোবাইলে বার্তালাপ ও এসএমএস পরিষেবা ব্যাহত হয়ে পড়েছে।


রবিবার রাত থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে ৩৬ ঘণ্টা মণিপুরের রাজপথ তথা জাতীয় সড়কে অবরোধ কর্মসূচি চলছে। এই অবরোধের ডাক দিয়েছে মণিপুর ওযেলফেয়ার অৰ্গানাইজেশন, মণিপুর মুসলিম ডেভেলপমেন্ট কমিটিকে নিয়ে গঠিত মণিপুর পিপলস অ্যাগেনস্ট সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল এবং পিপল অ্যালায়েন্স মণিপুর। সংগঠনগুলির উদ্যোগে রাজধানী ইমফলের বিভিন্ন রাজপথে অবরোধ গড়ে তোলায় জাতীয় সড়কে ব্যাহত হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচল। চলছে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ। রাজধানী-সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকায় সশস্ত্র বাহিনীর টহল চলছে।গত মাসখানেক ধরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে ধারা আন্দোলন চলছে রাজ্যে। রবিবার সন্ধা পাঁচটা নাগাদ স্থানীয় ইমা কেইথেল মাৰ্কেটে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয় আন্দোলনকারীদের।

উত্তেজিত মহিলা প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস এবং কৃত্রিম বোমা ছুঁড়েছিল। এতে আহত হয়েছিলেন ছয়জন। আহতদের রিজিওনাল ইন্সস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স (রিমস)-এ নিয়ে ভরতি করা হয়েছিল। তাঁদের আঘাত গুরুতর নয় বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
এদিকে রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লা আজ রাজ্যের সব মোবাইল ও ডাটা সার্ভিস বন্ধ করতে যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতে তিনি বলেছেন, \”বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, নাগরিক এবং সমাজবিরোধীরা হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে ঘৃণ্য অনভিপ্রেত ভিডিও এবং অডিওবার্তা প্রেরণ করে জনসাধারণকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে।

আন্দোলনের নামে ব্যাপক গুজব ছড়িয়ে জনতার আবেগে শুড়শুঁড়ি দিয়ে রাজ্যের বাতাবরণ দূষিত করার অশুভ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাই রাজ্যের আইন পরিস্থিতির কথা ভেবে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে বলে তাঁর নিষেধাজ্ঞাপত্রে লিখেছেন রাজ্যপাল।