নয়াদিল্লি, ২৪ জানুয়ারি ৷৷ অরুণাচল প্রদেশে জারি হতে পারে রাষ্ট্রপতি শাসন৷ রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এমনই প্রস্তাব দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা৷ তবে এখনও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি৷
জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে অমিত শাহের সভাপতি পদে পুননির্বাচনের অনুষ্ঠানের আগেই নিজ বাসভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন৷ সেই আলোচনাতেই অরুণাচলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা৷ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা পুনরায় এই সুপারিশ করবেন প্রধানমন্ত্রী৷ তারপরই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর৷
জানা গিয়েছে, গত কয়েকমাস ধরেই অরুণাচল প্রদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা গিয়েছে৷ গত মাসে বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন আস্থা হারায় অরুণাচল সরকার৷ ৪৭ জন কংগ্রেস বিধায়কের মধ্যে ২৬ জনকে নিয়ে বিধানসভা ছাড়েন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নাবাম তুকি৷ রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাজ্যের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য হস্তক্ষেপেরও আবেদন জানিয়েছিলেন স্বয়ং তুকি৷
অরুণাচলে রাজনৈতিক অস্থিরতাটি মূলত শুরু হয়েছিল গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর৷ ৬০ সদস্যের অরুণচাল বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক ৪৭ জন৷ এর মধ্যে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর ২১ জন বিধায়ক সহ দুইজন নির্দল ১১ জন বিজেপি সদস্যের সঙ্গে হাত মেলায়৷ ফলে, মুখ্যমন্ত্রী তুকির বিপক্ষে একজোট হন ওই ৩৪জন বিধায়ক৷ তুকির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব্য আনেন তাঁরা৷ যাকে অসাংবিধানিক ও বেআইনী আখ্যা দিয়েছেন তুকি৷ কিন্তু, তার পরোয়া না করে বিক্ষুব্ধরা তুকি পরিবর্তে অন্য এক সদস্যকে মুখ্যমন্ত্রী বাছেন৷ সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায় ঘটনা৷ এমনকী, রাজ্যপাল তথা প্রাক্তন বিজেপি নেতা জ্যোতিপ্রসাদ রাজখোয়া ‘বিজেপি এজেন্ট’ হিসাবে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন তুকি৷
এদিকে, সূত্রের খবর অরুণাচলের পরিস্থিতি নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শও নেওয়া হয়েছে৷ তার পর রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী নাবাম তুকি রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে মত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে হস্তক্ষেপের প্রয়োজন আছে বলে মনে করে কেন্দ্র৷ যদিও রাজ্যের পরিস্থিতির বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন৷ ফলে, সেই শুনানির মাঝেই ক্যাবিনেটের এই সুপারিশে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেস৷ বিষয়টি আদালতে টেনে নিয় যাওয়ার কাথা্য জানিয়েছে তারা৷
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা কপিল সিববাল অরুণাচলে রাষ্ট্রপতি শাসনের প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়েছেন৷ এদিকে, দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক৷ রাজ্যের ক্ষমতার উপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে৷ এদিকে নাবাম তুকি বলেছেন, অরুণাচলে রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন৷
2016-01-25

