তৃণমূল থাকলে সব কাজ হবে, জিততে হবে খেলায় : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

নন্দীগ্রাম, ২৯ মার্চ (হি.স.): পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শেষ দফার প্রচার-যুদ্ধে শুভেন্দু পুরোদমে লড়াই করছেন। তাই এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে চাইছেন না মমতাও। সোমবার মাত্রাতিরিক্ত গরমের মধ্যেই হুইলচেয়ারে বসে পদযাত্রা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষুদিরাম মোড় থেকে ঠাকুর চক পর্যন্ত পদযাত্রা করেন মমতা। পদযাত্রা শেষে নির্বাচনী সভায় ‘অধিকারীদের’ কটাক্ষ করে মমতা বলেছেন, “মাত্রাতিরিক্ত লোভ ভালো নয়। তাঁরা (অধিকারীরা) না ঘর কে রেহেগা, না ঘাটকা।” দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর সোমবার সকালেই প্রয়াত হয়েছেন ৮৫ বছর বয়সী বিজেপি কর্মীর বৃদ্ধা মা শোভারানী মজুমদার। অভিযোগ, মাস খানেক আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নিমতা এলাকায় বাসিন্দা শোভারানী মজুমদার ও তাঁর ছেলে বিজেপি কর্মী গোপাল মজুমদার নিজের বাড়িতেই তৃণমূল কর্মীদের প্রহারে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এদিন বৃদ্ধা শোভারানীর মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করে মমতা বলেছেন, “তাঁর কীভাবে মৃত্যু হয়েছে আমি জানি না। মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসা আমরা কখনওই বরদাস্ত করি না।” এরপর বৃদ্ধার মৃত্যুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের টুইটের প্রসঙ্গ টেনে এনে মমতা বলেছেন, “উত্তর প্রদেশের অবস্থা কী? হাথরাসের কী অবস্থা?

আগামী ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ হবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে। নন্দীগ্রামের মানুষের উদ্দেশে মমতা এদিন বলেছেন, “ভোট সকাল সকাল দিন। ওরা গুন্ডা নিয়ে ভয় দেখাবে। মনে রাখবেন, যাঁরা ভয় পায়, তাঁরাই ভয় দেখায়। আমি দেখি মা বোনেদের শক্তি বড় না বিহার, উত্তরপ্রদেশের গুন্ডাদের শক্তি বেশি। বাংলার যে কোনও জায়গা থেকে দাঁড়াতে পারতাম। কিন্তু আমি নন্দীগ্রামে এলাম, কারণ এটি আন্দোলনের ভূমি। আমি আন্দোলনকে, লড়াইকে স্যালুট করতে চাই। এটা আমার প্রিয় জায়গা ও পবিত্র জায়গা।” হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস থাকলে সব কাজ হবে। খেলায় জিততে হবে। গুন্ডারা গুন্ডামি করলে হাতা খুন্তি, ঝাড়ু দিয়ে আদর করে দিতে হবে। আপনারা মা বোনেরা আন্দোলন করেছে, তা আমরা জানি। দিনের পর দিন নন্দীগ্রামে মানুষকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। রাতের বেলায় ঘুমনোর উপায় ছিল না। ২৬-২৭ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। যারা মেরেছিল, তাদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে ভোট কেড়ে নিতে। নব সামন্ত চাইলে ভোট দেবেন? মা বোনেরা হাতা-খুন্তি নিয়ে বেরিয়ে আসবেন। কড়াইয়ে লুচি পড়বে, আর ফুলবে, আর বিজেপি জ্বলবে। নরেন্দ্র মোদীরা কৃষকদের সব অধিকার কেড়ে নিতে চায়, কিন্তু কেড়ে নিতে দেবেন না। ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার ভোটে তৃণমূলের এজেন্টরা সতর্ক থাকুন। টাকা দিলে খরচ করে দিন। সবাই মাস্ক পরে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। মাস্ক না পরে গেলে দিল্লির কিছু পুলিশ ভোট দিতে দিচ্ছে না। মেশিন খারাপ করে দিচ্ছে। তখন ছায়ায় দাঁড়াবেন, অপেক্ষা করবেন, ভোট দেওয়ার জন্য।” হুইল চেয়ারের এবার নির্বাচনী প্রচার করছেন মমতা, তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, “আমার হাঁটতে ভাল লাগে। সেই মানুষটাকে হুইল চেয়ারে বসে যেতে হচ্ছে। মনের মধ্যে একটা চাপ পড়ে। কিন্তু আমি ভেবে দেখেছি, আমার মা বোনেরা যদি আসতে পারেন, আমিও আসতে পারব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *