আগরতলা, ২০ জানুয়ারি (হি.স.)৷৷ ত্রিপুরায় বামফ্রন্ট জমানায় বিরোধীদের কথা বলার সুযোগ দেওয়া হতো৷ কিন্তু, এখন বিরোধীদের কন্ঠ রোধ করার চেষ্টা চলছে৷ বিধানসভার ভেতরে এবং বাইরে কোথাও বিরোধীদের কথা বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না৷ বিজেপি জোট সরকারকে নিশানা করে এ-কথা বলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার৷
বিরোধী দলগুলির ওপর ঘন ঘন আক্রমণ সম্পর্কে অবহিত করতে ত্রিপুরার রাজ্যপালের সাথে দেখা করার দুদিন পর সিপিআইএম-এর প্রবীণ নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বুধবার রাজধানী আগরতলায় একটি প্রতিবাদ রেলিকে নেতৃত্ব দেন৷ রেলিতে উপস্থিত বিরোধী দলের উপ-নেতা বাদল চৌধুরী, বিধায়ক তপন চক্রবর্তী, সহিদ চৌধুরী, সুধন দাস ও অন্যান্য নেতারা সমাবেশে কর্মীদের সাথে যোগ দিয়ে প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে রাস্তায় হেঁটেছেন এবং পরে ওরিয়েন্ট চৌমুহনিতে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন৷
মানিক সরকার বলেন, সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন কখনও ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) বা জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) সরকারের কাছ থেকে কোনও সমর্থন পায়নি৷ তবে আমরা ত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য কঠোর লড়াই করেছি, সাথে কাজের মাধ্যমে ত্রিপুরার উন্নয়ন করেছি৷
এদিন তিনি ক্ষমতাসীন বিজেপির সমালোচনা করে বলেন, বিরোধী দলের কণ্ঠ শুনতে দল প্রস্তুত নয়৷ তাঁর কথায়, বিরোধী দলগুলোর ওপর ঘন ঘন হামলার কারণে আমরা ১৮ জানুয়ারি ত্রিপুরার রাজ্যপালের সাথে দেখা করতে বাধ্য হয়েছিলাম৷ আমরা তাঁকে রাজ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছি৷ রাজ্যপাল সমস্ত কিছু শুনে গভীর চিন্তা ও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল৷
তিনি আরও বলেন, সিপিআইএম ক্ষমতায় থাকাকালীন আমরা বিরোধী দলকে বিধানসভার ভেতরে এবং বাইরে কথা বলার সুযোগ দিয়েছি৷ কিন্তু এখন বিরোধীদের কথা বলার সুযোগ নেই৷ তিনি তীব্র সমালোচনা করে বলেন, বিজেপি আমলে গণতন্ত্র মারাত্মক হুমকির মধ্যে রয়েছে৷ নির্বাচনের আগে প্রদত্ত তাঁদের প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে৷ ফলে একের পর এক জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা ভুল পথে হাঁটতে শুরু করেছে৷
মানিক সরকার আজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চিকিৎসক, প্যারামেডিকস, নার্স, সাংবাদিক এবং আইনজীবিদের ওপর আক্রমণ বাড়ছে৷ কিন্তু পুলিশ এবং সরকার কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷ তাঁর আক্ষেপ, বিজেপি-আইপিএফটি সরকারের গত ৩৪ মাসে ঘটেছে এমন ঘটনার জেরে হামলার পেছনে জড়িত একজনেরও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি৷ কারণ, রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবে পুলিশ পুতুলে পরিণত হয়েছে৷