কলকাতা, ৪ ডিসেম্বর(হি. স.): মুখ্যমন্ত্রী অনুমতি দিলেই কলকাতায় শুরু হবে গণ টিকাকরণ। এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। প্রথম পর্যায়ে ৫০ লক্ষ মানুষ এই টিকা পাবেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
রাজ্যে কোভ্যাকসিনের যে তৃতীয় দফার ট্রায়াল শুরু হয়েছে তাতে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে টিকা নিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তিনি সুস্থ এবং স্বাভাবিক থাকায় তার ওপর টিকা প্রয়োগ সফল হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যেই তিনি জানিয়েছেন কলকাতায় কাদের প্রথমে টিকা দেওয়া হবে সেই তালিকায় ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করা হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেলেই তা শুরু করা যাবে।
ফিরহাদ হাকিম আরও জানিয়েছেন, মূলত ৫০ বছরের উর্ধ্বে যারা রয়েছেন এবং ৫০ বছরের নিচে অথচ আনুষঙ্গিক রোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদেরকে প্রথম পর্যায়ে টিকা দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন বাড়িতে ঘুরে ঘুরে সমীক্ষা করেছেন পুর কর্মীরা। এই অনুযায়ী ৩০ লক্ষ মানুষের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে।
ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, তার শরীরে যে টিকা দেওয়া হয়েছে সেই টিকাই প্রথম দফায় কলকাতাবাসীর উপর প্রয়োগ করা হবে। তবে শুধু প্রথম পর্যায় নয় যাতে পরবর্তী ধাপ গুলিতেও শহরবাসী এই টিকা পান সেদিকেও নজর রাখা হবে।
এখন অপেক্ষা শুধু মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সংকেতের। এই প্রসঙ্গে পুর মন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দিলে প্রতিটি ওয়ার্ডে গণ টিকাকরণ শুরু করব। তালিকা প্রস্তুত রয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে ইতিমধ্যেই পুরো কর্মীরা শহরের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন। ৩০ লক্ষ মানুষের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে আরও কুড়ি লক্ষ মানুষের নাম নথিভুক্ত করার কাজ চলছে”।
প্রসঙ্গত, বুধবার বেলেঘাটা নাইসেডে গিয়ে করোনার টিকা নিয়েছেন পুরমন্ত্রী। টিকা নেওয়ার পর তিনি জানিয়েছেন তিনি সুস্থ রয়েছেন। এমনকি এও জানিয়েছিলেন, “যদি তার প্রাণহানি হয় তাতেও কোনও অসুবিধে নেই।” তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভ্যাকসিনের ফলে মানুষের দেহে করোনার অ্যান্টিবডি ঠিকমতো তৈরি হচ্ছে কিনা তা বুঝতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে। যদি দেখা যায় এই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আর করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন না, তাহলে বুঝতে হবে তার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে এবং ভ্যাকসিন সফল হয়েছে। কিন্তু এর উল্টোটা যদি হয় অর্থাৎ যদি ওই ব্যক্তির দেহে আবার করোনা থাবা বসায় তাহলে সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে এই টিকা কাজে দিচ্ছে না। ফিরহাদ হাকিমের ক্ষেত্রে এই নীতি কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে বিশেষজ্ঞদের তরফে।