কলকাতা, ৮ মার্চ (হি.স.) : আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মহিলাদের ক্ষমতায়নের বার্তা দিয়ে অর্ধেক মহিলা সহ রাজ্যসভায় তৃণমূলের চার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়| রবিবার নারী দিবসের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে তৃণমূলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। সেখানে প্রার্থী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছেন লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ তথা নাট্যব্যক্তিত্ব অর্পিতা ঘোষ, লোকসভার প্রাক্তন সংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী, প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়ক তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও রাজ্য তৃণমূল সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং প্রাক্তন সংসদ মৌসম বেনজির নূরের।
সামনেই রাজ্যসভা নির্বাচন। রাজ্যে পাঁচটি আসন ফাঁকা হচ্ছে। এর মধ্যে তৃণমূলের হাতে রয়েছে চারটি। সেই চার আসনে রবিবার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল তৃণমূল কংগ্রেস | রবিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে করে দলের কোনও মুখপাত্র নয়, টুইটারে চার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়| এদিন রাজ্যসভার প্রার্থী ঘোষণা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নারী দিবসকে সম্মান জানিয়ে লেখেন, “আমি গর্বের সঙ্গে জানাতে চাই, এবার রাজ্যসভায় আমাদের দলের প্রার্থীরা হলেন অর্পিতা ঘোষ, দীনেশ ত্রিবেদী, সুব্রত বক্সি, মৌসম বেনজির নূর।” এরপরই মমতা লেখেন, “মহিলাদের ক্ষমতায়নে আমরা সর্বদা সচেষ্ট। তাই অর্ধেক আসনে আমাদের মহিলা প্রার্থী। সবশেষে মুখ্যমন্ত্রী হেজ ট্যাগ দিয়ে লিখেছেন ইন্টারন্যাশনাল ওমেন্স ডে।”
তৃণমূল কংগ্রেস যাঁদের প্রার্থী করেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে তাঁদের তিনজনই গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন। মৌসম বেনজির নুর মালদহ উত্তরে বিজেপির খগেন মুর্মুর কাছে পরাজিত হন। অর্পিতা ঘোষ বালুরঘাটে পরাজিত হন বিজেপির সুকান্ত মজুমদারের কাছে। আর দীনেশ ত্রিবেদী পরাজিত হন বারাকপুরে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের কাছে। সেই তিনজনকেই এবার রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছেন মমতা। একই সঙ্গে প্রথম দিন থেকে দলের সৈনিক সুব্রত বক্সিকেও পাঠাচ্ছেন রাজ্যসভায়। তিনি অতীতে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা আসন থেকে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন। কিন্তু উনিশের ভোটে আর লোকসভায় প্রার্থী হতে চাননি তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। তখনই ঠিক ছিল তাঁকে রাজ্যসভা নির্বাচনে প্রার্থী করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গের যে পাঁচ সাংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে এই নির্বাচন হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে তৃণমূলের তরফে ছিলেন শিল্পী যোগেন চৌধুরী, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত, শিল্পপতি কে ডি সিংহ এবং আহমেদ হাসান ইমরান এবং ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এঁদের মধ্যে কে ডি সিংহের সঙ্গে তৃণমূলের এখন আর কোনও সম্পর্ক নেই। ইমরানের সঙ্গেও দূরত্ব অনেক বাড়িয়ে নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যোগেন এবং মণীশ এখনও দলেই রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের আর টিকিট দিলেন না মমতা। বরং ২০১৯-এর লড়াইয়ে যাঁরা জিততে পারেননি, তাঁদেরই অগ্রাধিকার দিলেন।
উল্লেখ্য, আগামী ২৬ মার্চ রাজ্যের খালি হওয়া পাঁচ আসনের সঙ্গে সারা দেশের ৫৫টি আসনের রাজ্যসভার নির্বাচন। আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন। ১৬ মার্চ হবে স্ক্রুটিনি। ভোট হবে ২৬ মার্চ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত। সে দিনই ফল প্রকাশ।