কালবুর্গি, ২৬ ডিসেম্বর (হি.স.) : সূর্যগ্রহণের সময় বিশেষভাবে সক্ষম শিশুকে গলা অবধি মাটিতে পুঁতে রাখলেন বাবা-মা। বৃহস্পতিবার দশকের শেষ বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণে এমনই কুসংস্কারের নিদর্শন দেখা গেল কর্ণাটকের কালবুর্গি শহরের কাছে তাজসুলতানপুর গ্রামে | আজ তাজসুলতানপুর গ্রামে তিন বিশেষভাবে সক্ষম শিশুকে গলা অবধি মাটিতে পুঁতে রাখে তাদের বাবা-মা। বিষয়টি জানতে পেরেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্থানীয় জনবাদী মহিলা সংগঠন। তারপর ওই শিশুদের মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় ।
প্রাচীনকাল থেকেই সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মনে অনেক ধরনের কুসংস্কার আছে। কোথায় গ্রহণের আগে রান্না করা খাবার ফেলে দেওয়ার নিয়ম তো কোথায় গ্রহণের সময় নিজের আশ্রয় থেকে বেরোন না অনেকেই। তবে একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে বিভিন্ন ধরনের চশমা পড়ে সূর্যগ্রহণ দেখার লোকও যে কম নেই তা এবারও প্রমাণ হয়েছে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও গ্রহণকে কেন্দ্র করে মানুষের মনে গড়ে থাকা কুসংস্কার কিছুতেই কম হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার বছরের শেষ সূর্যগ্রহণে তারই প্রমাণ মিলল। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কয়েকটি শিশুকে গলা পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখলেন তাদের বাবা-মা। ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের কালবুর্গি জেলার তাজ সুলতানপুর গ্রামে। তাঁদের বিশ্বাস ছিল, গ্রহণের সময় সন্তানদের মাটিতে পুঁতে রাখলে তাদের শারীরিক সমস্যা দূর হবে। অন্য শিশুদের মতোই স্বাভাবিক হয়ে উঠবে তারা।
বিষয়টি জানতে পেরেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্থানীয় জনবাদী মহিলা সংগঠনের প্রধান অশ্বিনী মান্দানকার। তারপর ওই শিশুদের মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করেন। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি যখন ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছিলাম তখনও তিনটি শিশুকে পুঁতে রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে সঞ্জনা নামে চার বছরের একটি মেয়ের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সে ঠিকভাবে বসতেও পারছিল না। পরে অচৈতন্য হয়ে পড়ে।’
কালবুর্গির ডেপুটি কমিশনার বি শরৎ জানিয়েছেন, তিনি খবর পেয়েই তহসিলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠান। শিশুদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশকে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমাজ থেকে এই ধরনের কুপ্রথা দূর করার জন্য সচেতনতামূলক প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।