নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ অক্টোবর৷৷ শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রাক্তন পূর্ত মন্ত্রী বাদল চৌধুরীকে আদালতে তুলতে ত্রিপুরা পুলিশ৷ আজ তাঁর মাথায় রক্তক্ষরণ জনিত সমস্যার কারণে চিকিৎসকরা তাঁকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেননি৷ খবর পেয়ে আগরতলা সরকারি মেডিকেল কলেজ তথা জি বি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকদের একটি টীম বাদল চৌধুরীকে দেখতে ছুটে যান৷ তাঁরাও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বাদল চৌধুরীকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেননি৷
এদিকে আগামীকাল সকাল ১১টায় ত্রিপুরা হাইকোর্টের অবসরকালীন কোর্টে বাদল চৌধুরীর আগাম জামিনের আবদলের শুনানী হবে৷ এই আবেদন করেছেন বাদল চৌধুরীর স্ত্রী৷ বিচারপতি অরিন্দম লোধের কোর্টে এই আবেদনের শুনানী হবে বল আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে৷

প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় পূর্ত ঘোটালায় প্রাক্তন পূর্ত মন্ত্রী বাদল চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভিজিলেন্স মামলা দায়ের করেছে৷ তাঁকে ছাড়াও প্রাক্তন পূর্ত কর্তা সুনীল ভৌমিক এবং পূর্ত দপ্তরের প্রাক্তন প্রধান সচিব তথা প্রাক্তন মুখ্য সচিব ওয়াই পি সিংহের বিরুদ্ধেও ভিজিলেন্স মামলা দায়ের করেছে৷ তাতে, পুলিশ সুনীল ভৌমিককে গ্রেপ্তার করেছে৷ আদালত সুনীল ভৌমিকের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় তাকে পুলিশ হেপাজতে পাঠানো হয়েছিল৷ সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জি বি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে৷ এদিকে, আজ তাকে আদালতে সোপর্দ করার সূচি ছিল৷ কিন্তু, চিকিৎসকরা এখনও তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়েননি৷ তাই আজ তাঁকে আদালতে তোলা সম্ভব হয়নি পুলিশের৷ সরকারি কৌশলী রতন দত্ত জানিয়েছেন, সুনীল ভৌমিক সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন৷
জি বি হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড গতকাল এবং আজ জানিয়েছে, সুনীল ভৌমিক সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন৷ শুধু তাঁর ব্লাড সুগার লেভেল বেড়ে রয়েছে৷ রতনবাবু জানিয়েছেন, আগামীকাল হাসপাতাল থেকে সুনীল ভৌমিক ছাড়া পেলে তাঁকে আদালতে তোলা হবে এবং তিনদিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ৷
এদিকে, আজ বাদল চৌধুরীকেও আদালতে সোপর্দ করতে চেয়েছিল পুলিশ৷ কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আজ তা সম্ভব হয়নি৷ এ-বিষয়ে বাদল চৌধুরীর পক্ষের আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন জানিয়েছেন, পুলিশ আজ বাদল চৌধুরীকে আদালতে তোলার জন্য সব চেষ্টা করেছিল৷ কিন্তু, চিকিৎসকরা তাঁকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেননি৷ পুরুষোত্তম রায় বর্মনের কথায়, আজ বাদলবাবুর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত সমস্যা হয়েছিল৷ সামান্য হলেও চিকিৎসকরা কোন ঝুঁকি নিতে রাজি হননি, তাই তাঁকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যেতে দেননি চিকিৎসকরা৷
পুরুষোত্তমবাবু বলেন, এই খবর পেয়ে আগরতলা সরকার মেডিকেল কলেজ ও জি বি হাসপাতালের ৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের এক টীম বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে বাদল চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন৷ পুরুষোত্তম দাবি করেন, ওই ৪ জন চিকিৎসকও বাদল চৌধুরীকে ফিটনেস সার্টিফিকেট দিতে পারেননি৷ কারণ, বাদলবাবু সত্যি অসুস্থ তা তাঁরা বুঝেছেন৷ তিনি বলেন, বাদল চৌধুরীকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশের অ্যাম্বুলেন্স সহ যাবতীয় সমস্ত আয়োজন করে রেখেছিল পুলিশ৷ কিন্তু, সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের অনুমতি না পাওয়ায় তাঁকে আদালতে নিয়ে যেতে পারেনি পুলিশ৷
এদিকে, সরকারি আইনজীবী রতন দত্ত দাবি করেন, বাদল চৌধুরী সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন৷ তিনি শুধু শুধু অসুস্থতার নাটক করছেন৷ তিনি বলেন, আজ বাদল চৌধুরীকে আদালতে তোলার কথা ছিল৷ কিন্তু, চিকিৎসকরা অনুমতি দেননি, তাই তাঁকে আজ আদালতে তোলা সম্ভব হয়নি৷ তবে, আগামীকাল তাকে অবশ্যই আদালতে সোপর্দ করবে পুলিশ এবং তাঁর রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে৷

