নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ জুন৷৷ উপজাতি কল্যাণকে প্রধান্য দেওয়া হোক সাধারণ বাজেটে, প্রাক বাজেট বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে এই বিষয়ে বিবেচনা জোড়ালো আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী৷ সাথে তিনি বিশেষ কেন্দ্রীয় সহায়তা (এসসিএ) এবং বিশেষ প্ল্যান সহায়তা (এসপিএ) এই দুই খাতে অর্থ বরাদ্দের রীতি ফিরিয়ে আনতে অনুরোধ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে৷
শুক্রবার সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলির অর্থমন্ত্রীদের সাথে প্রাক বাজেট বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন৷ ওই বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা দেশের আর্থিক কাঠামোকে ঢেলে সাজানোর জন্য এবং অর্থনৈতিক প্রগতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন৷ বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার দেশের আর্থিক ব্যবস্থা সংস্কার মূলক পদক্ষেপ নিয়েছে, তার প্রমাণ লোকসভা নির্বাচনে বিরাট জয়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে৷ অর্থমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা এদিন বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ব্যবসা আরো সহজতর করার জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন৷ শুধু তাই নয়, অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি বাস্তবায়নে পূর্বোত্তর উপকৃত হয়েছে৷ এই দাবি করে তিনি আগামী দিনে আরো উন্নতির আশা প্রকাশ করেছেন৷
অর্থমন্ত্রী এদিন পূর্বোত্তরের সাথে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার রেল সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন৷ তাতে এই অঞ্চল সহ ত্রিপুরার উন্নয়ন আরো তরান্বিত হবে বলে অর্থমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন৷ অঞ্চল ভিত্তিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে জাতিকে এগিয়ে আনা খুবই জরুরি বলে মনে করেন যীষ্ণু দেববর্মা৷ তাই তিনি পশ্চাতপদ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত উপজাতিদের জন্য বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছেন৷ তাঁর কথায় ২০১৯-১৮ বছরের বাজেটে উপজাতিদের জন্য মূল বাজেটের ১.৬ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছিলো৷ অথচ দেশের মোট জনসংখ্যার ৮.৬৪ শতাংশই হচ্ছে উপজাতি সম্প্রদায় ভুক্ত, যার অধিকাংশই উত্তর পূর্বাঞ্চলে বসবাস করছেন৷ তাঁর দাবি, তাদের মধ্যে অধিকাংশই দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছেন৷ ফলে তাদের উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো খুবই প্রয়োজন৷ তবেই, সবকা সাথ, সবকা বিকাশ আক্ষরিক অর্থে সফলতা পাবে৷ কারণ পিছিয়ে পড়া জাতি উপজাতিরা দেশের মূল স্রোতে আসতে পারবেন৷
এদিন তিনি বিশেষ কেন্দ্রীয় সহায়তা এবং বিশেষ প্ল্যান সহায়তা খাতে বরাদ্দের রীতি ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, পূর্বোত্তরের রাজ্যগুলির জন্য বিশেষ কেন্দ্রীয় বরাদ্দ হিসেবে বিশেষ কেন্দ্রীয় সহায়তা এবং বিশেষ প্ল্যান সহায়তার যোজনা কমিশনে জমানায় বরাদ্দ করা হতো৷ কিন্তু নীতি আয়োগ শুরু হতেই ওই খাতে অর্থ মঞ্জুর বন্ধ হয়ে গেছে৷ তাই নীতি আয়োগেও ওই খাতে পুনরায় অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনা করা হোক৷
এদিকে, সেন্ট্রাল স্পন্সর স্কিমের অন্তর্গত প্রকল্পগুলিতে ১০০ শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার বহন করুক, সেই দাবি জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা৷ তিনি বলেন, পূর্বোত্তরের রাজ্যগুলিতে পরিকাঠামো উন্নয়নের অভাবে দেশের বড় রাজ্যগুলির সাথে আমূল ফারাক হয়েছে৷ তাই সেন্ট্রাল স্পন্সর স্কিমের অন্তর্গত প্রকগুলিতে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ১০ শতাংশ বহন করা রাজ্যগুলির জন্য কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাই তিনি ওই প্রকল্পে ১০০ শতাংশ অর্থই কেন্দ্রীয় সরকার বহন করুক, সেই জানিয়েছেন৷