BRAKING NEWS

ধর্মনগর রেলস্টেশনে দশ লক্ষ টাকার ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই মহিলা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ জুন ৷৷ শিলচর-আগরতলা প্যাসেঞ্জার ট্রেনে করে পাচারের সময় ধর্মনগর স্টেশনে প্রায় দশ লক্ষ টাকার ৫০ হাজারটি ইয়াবা ট্যাবলেট-সহ দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে রেল পুলিশ৷ আজকের ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর জেলার সদর ধর্মনগরকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করছে ড্রাগস মাফিয়ারা৷ ধর্মনগরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় ত্রিপুরার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নেশা দ্রব্য৷ ধৃত দুই মহিলাকে পুষ্পা খাতুন (৩৫) এবং আফিয়া খাতুন (৩২) বলে পরিচয় পাওয়া গেছে৷ তারা ত্রিপুরার সোনামুড়া অঞ্চলের রবীন্দ্রনগর ও শহিদ চন্দ্রপাড়া কুলুবাড়ি এলাকার বাসিন্দা৷


বৃহস্পতিবার দুপুর একটা নাগাদ গোপন সূত্রের ভিত্তিতে রেল স্টেশনের পাশে ওত পেতে বসে এই সাফল্য পেয়েছে ধর্মনগরের জিআরপিএফ৷ জানা গেছে, এদিন শিলচর থেকে আগরতলাগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি ধর্মনগর রেলস্টেশনে পৌঁছতেই তল্লাশি শুরু করে রেল পুলিশ৷ তখন ট্রেনের দুই মহিলা যাত্রীর ব্যাগের প্রতি তাদের দৃষ্টি যায়৷ ওই ব্যাগ দুটি খুলে তল্লাশি করতেই ব্যাগের ভিতরে পাওয়া যায় নেশার ইয়াবা ট্যাবলেটগুলো৷ দুটি ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় পঞ্চাশ হাজারটি ইয়াবা নামক সর্বনাশা নেশার ট্যাবলেট৷ এগুলি ব্যাগের ভিতরে বড় প্যাকেটে পাঁচটি করে ছোট প্যাকেট এবং এর ভেতরে আবার পাঁচটি করে প্যাকেটের ভেতরে ইয়াবা ট্যাবলেটগুলি রাখা ছিল৷


সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয় ট্যাবলেটগুলির বাহক দুই মহিলা পাচারকারিকে৷ ইয়াবা ট্যাবলেট-সহ নেশা কারবারি দুই মহিলা বর্তমানে জিআরপিএফ-এর হেফাজতে রয়েছে৷ শুক্রবার উদ্ধারকৃত ট্যাবলেট সমেত দুই পাচারকারিকে স্থানীয় সাধারণ পুলিশের মাধ্যমে ধর্মনগর আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছে রেল পুলিশ৷ বাজেয়াপ্তকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটের বাজারমূল্য প্রায় দশ লক্ষ টাকার মতো হবে বলেও জানিয়েছেন জিআরপিএফ কর্তৃপক্ষ৷


জেরার মুখে ধৃতরা নাকি স্বীকার করেছে, বিপুল পরিমাণের এই নেশার ট্যাবালটেগুলো তারা শিলচরের চামড়া গোদাম এলাকা থেকে জনৈক ডালিমের কাছ থেকে সংগ্রহ করে কমিশনের বিনিময়ে আগরতলা পৌছে দেওয়ার কথা ছিল৷ পুষ্পা খাতুন নাকি বলেছে, তার বাড়ির পাশে শিলচরের (অসম) জনৈক যুবক থাকেন৷ তার সাথে তাদের পরিচয় হয়৷ ওই যুবক তাদের শিলচর নিয়ে যায় এবং সেখানে অন্য আরও দুজন এসে তাদের কিছু জিনিস দেয়, একজনের নাম ডালিম৷ ট্যাবলেটগুলি হস্তান্তরের বিনিময়ে তাদেরকে সাত হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল৷ এ-ধরনের কাজ তারা আগেও করেছে বলে পুলিশের কাছে প্রদত্ত জবানবন্দিতে জানিয়েছে পুষ্পা খাতুন৷


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রশাসন যতই কঠোর হচ্ছে ততই নতুন নতুন ফর্মুলায় নেশা সামগ্রী পাচারে সক্রিয় হয়ে উঠছে নেশা পাচারকারী সিন্ডিকেটগুলো৷ তারা এবার এ-সব কাজে অসহায় তথা গরিব মহিলাদেরকেও উৎসাহিত করে তুলেছে৷ বাস ও ট্রাকের পরিবর্তে চোরাকারবারিরা এখন ট্রেনকেই নিরাপদ ভেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে৷ তবে এদের ধরতে ত্রিপুরা পুলিশ বার বার সফল হলেও অসম পুলিশ এবং অসমে জিআরপিএফ-এর ভূমিকা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ণ উঠতে শুরু করেছে৷
এদিকে আজকের এই সাফল্যে সন্তোষ ব্যক্ত করেছে ত্রিপুরা বিজেপি৷ বিজেপি-র উত্তর ত্রিপুরা জেলা সম্পাদক কাজল দাস জিআরপিএফকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ-ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *