আবারও সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় করবে সরকার, প্রক্রিয়া শুরু ১০ই

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ জুন৷৷ আবারও রাজ্যে কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কিনবে রাজ্য সরকার৷ গত খারিফ মরসুুমে রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে সহায়কমূল্যে ধান কেনার পর চলতি রবি মরশুমেও রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ খাদ্য, জনসংভরন ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের উদ্যোগে এবং কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সহযোগিতায় আগামী ১০ জুন থেকে ন্যুনতম সহায়ক মূল্যে প্রতি কুইন্টাল ১৭৫০ টাকা দামে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ আজ সন্ধ্যায় খাদ্য দপ্তরের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব এই সংবাদ জানিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, একজন কৃষক ন্যুনতম ২ কুইন্টাল থেকে সর্বোচ্চ উৎপাদিত যে কোন পরিমাণ ধান বিক্রি করতে পারবেন৷


এদিন তিনি জানান, রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক উদ্যোগে ২০১৮-১৯ খারিফ মরশুমে রাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবারের মত রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে তাঁদের উৎপাদিত ধান সংগ্রহ করা হয়৷ প্রথমবারের এই সংগ্রহ পর্বে ভারতীয় খাদ্য নিগম রাজ্য সরকারকে সাহায্য করেছিল৷ খারিফ মরশুমে মোট ১০,৪০৫ মেট্রিকটন ধান ত্রিপুরা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল৷ চলতি রবি মরশুমেও ১০,০০০ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে৷ তার জন্য রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে ২ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে৷


খাদ্যমন্ত্রী আরও জানান, রবি মরশুমে রাজ্য সরকার নিজস্ব পরিকাঠামোতেই ধান সংগ্রহ করবে৷ এফ সি আই এবার এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবেনা৷ তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের ৮টি জেলার ১৮টি ব্লক/ পুরপরিষদ/নগর পঞ্চায়েত এলাকায় ধান সংগ্রহ কেন্দ্র খোলা হবে৷ ওই এলাকাগুলি হচ্ছে মোহনপুর ব্লক, জিরানীয়া ব্লক, খোয়াই ব্লক, তেলিয়ামুড়া ব্লক, বিশালগড় ব্লক, তেপানীয়া ব্লক, কাকড়াবন ব্লক, মাতাবাড়ী ব্লক, নলছড় ব্লক, দুর্গাচৌমুহনী ব্লক, ডুকলী ব্লক, বকাফা ব্লক, রাজনগর ব্লক, সাতচাঁদ ব্লক, চণ্ডীপুর ব্লক, পানিসাগর ব্লক, সোনামুড়া ও বিলোনীয়া৷ সাথে যোগ করেন, এছাড়াও ইচ্ছুক চাষীগণ সরাসরি বোধজংনগর ও খয়েরপুরে অবস্থিত ধান কলে নির্দিষ্ট মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারবেন৷ প্রতিটি ধান সংগ্রহ কেন্দ্রে সেই মহকুমার অন্তর্গত সকল ব্লক এবং পার্শ্ববর্তী মহকুমার কৃষকগণ তাদের উৎপাদিত ধান বিক্রি করতে পারবেন৷


খাদ্যমন্ত্রী আজ সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির জন্য আগ্রহী কৃষকদের ওই এলাকার সংশ্লিষ্ট কৃষি আধিকারিক, ভি এল ডব্লিউ / এগ্রি সেক্টর অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন৷ সাথে বলেছেন, আবেদনপত্রের সঙ্গে আধারকার্ডের কপি, ব্যাঙ্কের পাস বুকের কপি, সংশ্লিষ্ট কৃষি আধিকারিকদের কাছ থেকে শংসাপত্র (সার্টিফিকেট) নিতে হবে, যা ধান বিক্রির সময় উপস্থাপন করা আবশ্যক৷ তিনি জানান, প্রদত্ত ধানের মূল্য হিসাবে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থরাশি চার কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের স্ব-স্ব ব্যাঙ্ক এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে খাদ্য, জনসংভরন ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তর প্রদান করবে৷


খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় বড় আকারের দুইটি মাত্র রাইস মিল রয়েছে৷ তাই, ইচ্ছে থাকলেও ত্রিপুরা সরকার আরও বেশী পরিমাণে ধান কৃষকদের কাছ থেকে কিনতে পারছেনা৷ এজন্য ত্রিপুরায় বড় আকারের রাইস মিল স্থাপন করার জন্য তিনি শিল্পদ্যোগীদের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, রাজ্যে কয়েকজন বেকার যুবক মিলে যদি রাইস মিল স্থাপন করতে চান সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে প্রস্তুত৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *