নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ এপ্রিল৷৷ জোড়া খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত ত্রিপুরার ধলাই জেলার গন্ডাছড়া মহকুমা৷ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আমবাসা-গন্ডাছড়া সড়কের ভগীরথ কলোনি এলাকায় দুই ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়৷ এই ঘটনায় সকাল থেকে কার্যত বনধের পরিবেশ বিরাজ করছে গন্ডাছড়ায়৷ সমস্ত দোকানপাট বন্ধ৷ এমনকি যানবাহন চলাচলও প্রায় বন্ধ হয়ে রয়েছে৷ পুলিশ এই খুনের কিনারা করতে না পারলেও, তদন্ত শুরু করেছে৷

গন্ডাছড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত একটা নাগাদ আমবাসা-গন্ডাছড়া সড়কে ভগীরথ কলোনি এলাকায় দুটি মৃতদেহ পড়ে রয়েছে বলে খবর আসে৷ খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ছুটে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেছে৷ পুলিশের বক্তব্য, মৃতদেহ দুটি শনাক্ত হয়েছে৷ তাঁরা হরিপুর এলাকার বাসিন্দা তপন দাস (৩০) এবং তারাবন কলোনির বাসিন্দা জাইসা ত্রিপুরা (৩২)৷ দু’’জনই পেশায় অটো চালক৷
পুলিশ জানিয়েছে, দুজনকেই নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে৷ তাঁদের মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে৷ পুলিশের কথায়, মৃতদেহের পাশেই একটি লাঠি উদ্ধার হয়েছে৷ তাছাড়া, মৃতদেহ থেকে কিছুটা দূর পর্যন্ত রক্তের ছাপ পাওয়া গিয়েছে৷ ফলে, তাঁদের খুন করে ওখানে ফেলে রাখা হয়েছে কিনা তা-ও তদন্ত করছে পুলিশ৷
জানা গেছে, বুধবার তাঁরা আমবাসা গিয়েছিলেন৷ রাতেই তাদের ফেরার কথা ছিল৷ কিন্তু, গন্ডাছড়ায় আইপিএফটি-র অবরোধের কারণে তাঁরা ফিরতে পারেননি৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে অবরোধ উঠে যাওয়ার পর তারা বাইকে চেপে বাড়ি ফেরার জন্য রওনা দেন৷ তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে এই তথ্য মিলেছে৷ কিন্তু, আমবাসা থেকে রওনা দেওয়ার পর তাঁদের আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান নিহত জইসা ত্রিপুরার পরিবারের জনৈক সদস্য৷ পুলিশ জানিয়েছে, পাশের জঙ্গলে বাইকটি অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে৷ এদিকে, মৃতদেহ দুটি ময়না তদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে আজ৷ পুলিশ জানিয়েছে, ডগ স্কোয়াড এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখেছেন৷ তবে খুনের প্রকৃত কারণ এখনও বের করা সম্ভব হয়নি৷
জোড়া খুনের ঘটনায় সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে সমগ্র গন্ডাছড়া মহকুমা৷ দোকানপাট, যান চলাচল বন্ধ৷ স্থানীয়দের বক্তব্য, আতঙ্ক ও বিক্ষোভের কারণেই সমস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান-সহ যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে৷ এদিকে, বিজেপি এবং আইপিএফটি উভয়েই নিহত দুই ব্যক্তি তাদের সমর্থক বলে দাবি করেছে৷ তাতে, এই ঘটনাটি রাজনৈতিক খুন কিনা সেই প্রশ্ণও উঠেছে৷ কারণ, পোলিং এজেন্টকে মারধরের ঘটনায় অবরোধ এবং থানায় মামলা নিয়ে রাজনৈতিক পারদ ক্রমশ ঊর্ধমুখী৷ এরইমধ্যে জোড়া খুনের ঘটনায় গন্ডাছড়া মহকুমার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে দিয়েছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, এই খুনের সাথে জড়িত এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি৷ তবে তদন্ত জোড়কদমে চলছে৷