ঢাকা, ৩ এপ্রিল (হি. স.) : সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা জুডিশিয়াল ক্যু অর্থাৎ বিচারিক অভ্যুত্থান করার চেষ্টা করেছিলেন, এমনই গুরুতর অভিযোগ করেছেন আইন ও বিচারমন্ত্রী আনিসুল হক। আইন মন্ত্রণালয়ের এক অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ করার পর বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে তারই পুনরাবৃত্তি করেন তিনি। এদিন সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের নতুন হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকরা মঙ্গলবারের বক্তব্য উল্লেখ করে সাবেক প্রধান বিচারপতিকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে কিনা জানতে চান।

এদিন সাংবাদিকরা মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, “গতকাল আপনি মন্ত্রণালয়ের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহার ‘জুডিশিয়াল ক্যু’ অর্থাৎ বিচারিক অভ্যুত্থান করার অভিপ্রায় ছিল। হঠাৎ বিষয়টি কেন এল?” এই প্রশ্নের জবাবে আইন ও বিচারমন্ত্রী বলেন, “আপনারা দেখুন কী হয়, ভবিষ্যৎ দেখেন। বিষয়টি হঠাৎ করে আসেনি, সমন্বয় সভার আলোচনার মধ্যে দিয়ে এসেছে। সেখানে অগ্রগতি, কিছু কিছু ব্যাপারে অগ্রগতি হয়নি, কেন হয়নি এসব নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছিলাম। সেইসব আলাপ-আলোচনার মধ্যে কিছু কথা হয়েছে। আমি মনে করি যে কথা হয়েছে, সেগুলো সত্য।” আইনমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় নির্বাহী বিভাগ কখনওই হস্তক্ষেপ করবে না।” ভবিষ্যতে ‘বিচারিক অভ্যুত্থান’ ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি-না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয় জনগণের শক্তি যতই বৃদ্ধি হবে এ রকম ‘বিচারিক অভ্যুত্থান’ এগুলো থেকে মানুষ বিরত থাকবে।”
উল্লেখ্য, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে সরকারের তোপের মুখে থাকা তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর ৩৯ দিনের ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যান। পরে তিনি বিদেশ থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন এবং কানাডা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। এ ঘটনার এক বছরের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রে বসে একটি বই প্রকাশ করে তিনি নতুন করে আলোচনায় আসেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, সরকার তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্বাসনে পাঠিয়েছে।