লখনউ, ৫ জানুয়ারি (হি.স.) : আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জোট করেই লড়বে সমাজবাদী পার্টি (সপা) এবং বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা)। এই বিষয়ে দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সম্মতি জানিয়েছে বলে দাবি করেছেন সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধুরী। অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতী নিজেদের মধ্যে একাধিকবার আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছিয়েছেন। শুক্রবারও দুই নেতার মধ্যে বৈঠক হয়। অন্য ছোট দলগুলির সঙ্গেও বৈঠক চলছে। এই মাসের শেষেই জোট নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এই মহাজোটে কংগ্রেস থাকবে কিনা সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাজেন্দ্র চৌধুরী বলেন, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতী। কিন্তু এই জোট আমেঠি এবং রায়বরেলিতে কোনও প্রার্থী দেবে না। কারণ এই দুইটি লোকসভা আসন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধীর জন্য ছাড়া হবে।বিগত তিনটি লোকসভা উপনির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি এবং কংগ্রেসের মহাজোটের কাছে পরাজিত হতে হয়েছে বিজেপিকে। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের ৮০ লোকসভা আসনে ৭১টি আসনে জয়লাভ করেছে বিজেপি। রাজ্যের প্রায় ৪২.৬৩ শতাংশ ভোট তারা নিশ্চিত করেছে। বিজেপির জোটসঙ্গী আপনা দল দুইটি আসনে জয়লাভ করেছে। সমাজবাদী পার্টি জয় পেয়েছিল পাঁচটি আসনে। জোটে লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি যোগ দিতে পারে বলে আভাস দিয়ে রাজেন্দ্র চৌধুরী বলেন, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে আরজেডির উপস্থিতি রয়েছে।
কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যাবেন না অখিলেশ, ইঙ্গিতটা মিলেছিল মধ্যপ্রদেশে সরকার গঠনের পর। অখিলেশ চেয়েছিলেন, মধ্যপ্রদেশে তাঁর দলের বিধায়ককে কোনও মন্ত্রিত্ব দেওয়া হোক। কিন্তু তা করেনি কংগ্রেস। আর তাতেই নাকি ক্ষুব্ধ হন অখিলেশ। তিনি উষ্মা প্রকাশ করে জানান, মধ্যপ্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছতে তাঁর দল যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে কংগ্রেসকে। কিন্তু তার পরেও কথা রাখেনি তারা। সপা-র বিধায়ককে মন্ত্রিত্ব না দিয়ে যে কংগ্রেস নিজের ক্ষতিই করল সেই ইঙ্গিতও দেন অখিলেশ।
সেই সময় তিনি বলেন, “আমাদের বিধায়ককে মন্ত্রিত্ব না দিয়ে উত্তরপ্রদেশে নিজেদের পথটা পরিষ্কার করে দিল কংগ্রেস।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই জোট যদি হয় তা হলে বিজেপির পক্ষে খুব একটা শুভ সঙ্কেত নয়। এমনিতেই বিধানসভা নির্বাচনে হেরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল অখিলেশের। মায়াবতীর দলও সে ভাবে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না সে রাজ্যে। বিজেপিকে ধাক্কা দিতে তাই দু’দলই মরিয়া। নিজেদের শক্তিপ্রদর্শন করতে লোকসভা নির্বাচনকেই তাই বেছে নিতে চাইছেন অখিলেশ-মায়া। বিজেপিকে একা ধাক্কা দেওয়া যে সম্ভব নয় সেটা দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভাল ভাবেই জানেন। তাই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে এ বার পরস্পরের হাত সঙ্গে হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন অখিলেশ-মায়াবতী।২০১৭-র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩১২টি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। তাদের মোট প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৩৯.৬৭ শতাংশ। অন্য দিকে, এসপি পেয়েছিল ৪৭টি আসন। তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ২১.৮২ শতাংশ। বিএসপি পেয়েছিল ১৯টি আসন। তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ২২.২৩ শতাংশ। বিধানসভা ভোটের ফলের দিকে যদি তাকানো যায়, তা হলে দেখা যাবে, এসপি ও বিএসপি-র মোট প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৫.০৫ শতাংশ।