জম্মু, ২৩ জুন (হি.স.): জম্মু ও কাশ্মীরে রাজ্যপাল শাসন জারি হওয়ার পর এই প্রথম শনিবার উপত্যকায় সফরে এলেন বিজেপির সর্বভারতীয়
সভাপতি অমিত শাহ। আর এসেই পিডিপি এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এক যোগে তোপ দাগার পাশাপাশি বিজেপির অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি।

এদিন বিকেলে জম্মুতে জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবসে উপলক্ষ্যে এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, শান্তি এবং উপত্যকার তিনটি অঞ্চলে সমপরিমাণ উন্নয়নের সমঝোতায় জোট গড়ে উঠেছিল। সমান ভাবে জম্মু ও কাশ্মীরে উন্নয়নের কাঙ্খিত লক্ষ্যে যদি পৌঁছনো না যায়। তা হলে জোট সরকারে বিজেপির থাকাটা কোনও মানে হয় না। মোদী সরকার বহু প্রচেষ্টা করলেও রাজ্য সরকার জম্মু এবং লাদাখের প্রতি বিমাতৃ সুলভ আচরণ করেছে। জম্মুতে এইমস গড়ার জন্য পিডিপি জমি দেয়নি। এর জন্য আমরা পিডিপির কাছে জবাবদিহি চাইছি। আর তখনই আমরা বিরোধী বেঞ্চে বসে প্রতিবাদে মুখর হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। পশমিনার উন্নয়নের জন্য আমরা ৪০ কোটি এবং পাম্পরা হাটের জন্য ৪৫ কোটি টাকা ধার্য করেছিলাম। দুইটি পরিবার ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) তিনটি প্রজন্ম ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে শাসন করেছে কিন্তু পাশমিনা এবং পামপোরা হাটের জন্য তারা কিছুই করেনি। গত বছর যখন আমি জম্মু ও কাশ্মীরে এসেছিলাম তখন আমরা জোট সরকারে (বিজেপি-পিডিপি জোট) ছিলাম। আমাদের সমর্থন তুলে নেওয়ার জন্য আজ এখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে। সরকার পড়ে গেলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি অনুতাপে ভুগতো। কিন্তু বিজেপি-ই একমাত্র পার্টি যারা সরকার পড়ে যাওয়ার পড়ে উচ্ছাস দেখিয়ে ‘ভারত মাতা কি জয় ধ্বনি’ দিয়ে বেরিয়ে আসে। এতেই বিজেপির জাতীয়তা বোধ প্রমাণিত হয়। নরেন্দ্র মোদী সরকার রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ৮০,০০০ কোটি টাকা প্যাকেজ ধার্য করে। কিন্তু সেই অর্থটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। জঙ্গি দমন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বাড়বাড়ন্ত রুখতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ব্যাঙ্কার তৈরি করার জন্য কেন্দ্রের তরফ থেকে ৪০০ কোটি টাকা রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকাটাও অব্যবহৃত থেকে যায়। আশা করা যায় রাজ্যপালের শাসনে উপত্যকায় পরিস্থিতি উন্নত হবে এবং জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্তের উপরও রাশ টানা যাবে।
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে লস্কর-ই-তৈবার কি সম্পর্ক রয়েছে? এটা কি ধরণের সম্পর্ক যে লস্কর-ই- তৈবা যা বলছে তা কংগ্রেসের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। পাকিস্তানপন্থী মন্তব্য করার জন্য কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর উচিত ক্ষমা চাওয়া।
এদিন স্বাধীনতা সংগ্রামী, শিক্ষাবিদ, অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার প্রাক্তন সভাপতি, ভারতীয় জন সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জনক ড.শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ৫৭তম প্রয়াণ দিবসে তাঁকে পরম শ্রদ্ধা জানিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেন, শ্যামাপ্রসাদের আত্ম বলিদানের জন্য কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেকে ভারতের মধ্যে জুড়তে তাঁর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
এর আগে শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ শনিবার জম্মু ও কাশ্মীরে আসেন বিজেপির সর্বভারতী সভাপতি অমিত শাহ। জম্মুতে তাঁকে স্বাগত জানান বিজেপির যুব মোর্চার কর্মীরা মোটর বাইকে করে র্যালির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। রাজ্যের দলীয় কর্মী এবং বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে বৈঠক করে বিজেপির সর্বভারতীয় অমতি শাহ। পিডিপি-বিজেপি জোট ভেঙে যাওয়ার পর এই প্রথম জম্মু ও কাশ্মীর সফরে এলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।