নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ মে ৷৷ দীর্ঘ সাত বছর আগে পাপাই সাহা হত্যাকাণ্ডে এবং রাজধানী আগরতলার বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত হিংসাশ্রয়ী ঘটনার মামলা থেকে রেহাই পেলেন রাজ্যের নয়জন রাজনৈতিক নেতা৷ তৎকালীন সময়ে এই নেতারা অধিকাংশই কংগ্রেসের দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকলেও এখন তাঁরা সবাই এক সঙ্গে নেই৷ শুক্রবার আদালত এই যুগান্তকারী ঘোষণা দিয়েছে৷ ২০১১ সালের ১১ জুন রাজধানী আগরতলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্ত্তি কেলেঙ্কারির নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়৷ তৎকালীন সময়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল এই ইস্যুতে পথে নামে৷ ১০ এবং ১১ জুন টানা দুদিন ধরে রাজধানী আগরলায় বিভিন্ন এলাকায় এই সংঘর্ষ চলে৷ দ্বিতীয় দিন ১১ জুন রাজধানী আগরতলার প্রাণকেন্দ্র কামান চৌমুহনি সংলগ্ণ এলাকায় গুলিতে নিহত হন এলাকা যুবক পাপাই সাহা৷ এ ঘটনার অব্যবহিত পরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ পুলিশি তদন্তও চলে৷ বিরোধীদের তরফে অভিযোগ উঠে, টিএসআর-এর গুলিতে পাপাই সাহার মৃত্যু হয়েছে৷ এর পরই তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেসের বিধায়ক রতনলাল নাথ, সুদীপ রায়বর্মণ, বর্তমান বিজেপি বিধায়ক তথা তৎকালীন যুবকংগ্রেস সভাপতি সুশান্ত চৌধুরী, সুবল ভৌমিক, গোপনল রায় – সহ নয়জনের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ও হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়৷ অভিযোগ থেকে খালাসপ্রাপ্ত নয়জনের মধ্যে প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল রায়ই শুধু বর্তমানে কংগ্রেসে রয়েছেন৷ বাকিরা সবাই এখন বিজেপিতে কোনও না কোনও দায়িত্বে রয়েছেন৷ রতনলাল নাথ ও সুদীপ রায়বর্মণ বর্তমানে বিজেপি পরিচালিত মন্ত্রিসভার সদস্য৷
উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১১ সালের ১০ এবং ১১ জুনের এই ঘটনায় আটজন সাংবাদিক সহ বহু সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক কর্মী আহত হয়েছিলেন৷ তবে পাপাই সাহার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এখনও বিশেষ কোনও সাফল্য আসেনি৷ যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল তাঁরা সকলেই ছাড়া পেয়ে গেছেন৷ এই হত্যাকাণ্ডের পর পাপাই সাহার পরিবার থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রকৃত দোষীদের চিহ্ণিত করে দোষীদের শাস্তি বিধানের জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি করে আসছিল৷ কিন্তু তৎকালীন সময়ে বামফ্রন্ট সরকার এই দাবি নাকচ করে দেয়৷ আদালত নয় অভিযুক্তকে খালাস করে দেওয়ার পর এই ঘটনার তদন্ত নিয়ে পুলিশের অবস্থান আরও দুর্বল হল বলে মনে করা হচ্ছে৷