৬৫ দিনে যেন স্বার্থের দামামা বাজে

সায়ন্তক চৌধুরী
এখনো মত্র বয়স ৬৫টি দিন৷ হাঁটি হাঁটি পা পা অবস্থা৷ এরই মাঝে রাজ্যবাসী হতবাক৷ দেখছে এ অল্প কয়দিনে কেমন যেন অস্থির হয়ে উঠেছে একে অপরের প্রতি৷ একটু এদিক সেদিক হলে শুরু হচ্ছে হাতাহাতি, মারামারি এবং রক্তাক্ত ঘটনা৷ কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলতে চাইছে না৷ সবাই নিজ হিসাব ঠিক রাখতে চাইছে৷ হোক না সেই হিসাব বেহিসাবী৷ তবুও নিজ পাতে ঝোল টানতে চাইছে সকলে৷ প্রকাশ্যে এসে যাচ্ছে রেষারেষির ঘটনা৷ তাই এ ৬৫ দিনের মাঝে সিংহভাগ রাজ্যবাসী যেন ক্ষোভে ফঁুসছে৷ এ ক্ষোভ নতুন বিজেপি জোট সরকারের প্রতি৷ অনেকের অভিমত, বিজেপি খাল কেটে কুমীর ঘরে এনেছে৷ এ কুমীর জোটে থাকা আইপিএফটি দলকে যেমন বোঝাচ্ছে তেমনই রয়েছে নব্য বিজেপিরা৷ ফলে বিজেপির অবস্থা হয়েছে শ্যাম রাখি না কুল রাখির মত৷
বিশেষ করে জোটের মাঝে দ্বন্দ্ব তেমন ভাল চোখে দেখছে না অনেকে৷ পাহাড় ঘিরে চলছে এ দ্বন্দ্ব৷ সেই সাথে সম্প্রতি বিএসি ঘিরে এ দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হচ্ছে৷ বিজেপি জোট সরকার রাজ্য জুড়ে কর্ম সংসৃকতি ফিরিয়ে আনার উপর জোর দিয়েছে৷ বিশেষ করে গ্রাম পর্যায়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ৷ ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন দপ্তরে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা৷ নতুন বিজেপি সরকার নিজেকে গুছিয়ে নিতে কিছুটা

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিজেপির নির্বাচন প্রভারী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও আইপিএফটি সভাপতি এনসি দেববর্মা৷ নিজস্ব ছবি৷

সময় নিলেন৷ বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংসৃকতি ফিরিয়ে আনতে ঘোষণা করা হয় বিএসি (ব্লক এডভাইজারি কমিটি)-র নাম ঘোাষণা করা হয়৷ নাম ঘোষণার পর বিজেপি ও আইপিএফটির সমর্থকদের মাঝে বিদ্রোহ দেখা দেয়৷ এ বিদ্রোহের কারণ হল খোয়াই মহকুমার তুলাশিখর ব্লকের বিএসির নাম ঘোষণা নিয়ে৷ তুলাশিখর বিএসি করা হয় আইপিএফটির প্রদীপ দেববর্মাকে৷ বিষয়টি মানতে পারেনি বিজেপি সমর্থকরা৷ ফলে গন্ডাছড়ার ষাট কার্ড এলাকায় বিজেপি কর্মীরা বিদ্রোহী হয়ে উঠে৷ গন্ডাছড়া বাজার ও চৌমুহনীর বাজারগুলিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং এর সমর্থনে পিকেটিংয়ে বসে বিজেপির কর্মীরা৷ বিজেপি কর্মীরা বিজেপি অফিস ভাঙচুর ও রাস্তা অবরোধ করে৷ মোতায়েন করা হয় পুলিশ৷ বিজেপি কর্মীরা প্রদীপ দেববর্মাকে মানতে চাইছে না৷ এদিকে আইপিএফটি কর্মীদের মাঝেও দেখা দেয় উত্তেজনা৷ তারাও নারায়ণপুর মগ পাড়ার মুখে জড়ো হতে থাকে৷ পুরো এলাকা যেন এক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়৷ ছুটে আসে পুলিশ এবং বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বরা৷ বিএসির চেয়ারম্যান নিয়ে গন্ডাছড়ায় ঘটে গেল ন্যাক্কারজনক অপ্রীতিকর ঘটনা৷ মাত্র ৬৫ দিন হল ক্ষমতায় বিজেপি জোট সরকার৷ এরই মাঝে কর্মীদের বিক্ষোভ কোন অবস্থায় নতুন সরকারের পক্ষে সুখকর নয়৷ বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে বটে৷ কিন্তু, এখনো সাংগঠনিক শক্তিতে বলীয়ান নয়৷ অনেকটা বাম বিরোধী হাওয়ায় বিজেপির সরকারে আসা৷ কিন্তু এরই মাঝে সাধারণ মানুষ যেন তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছে৷ গ্রাম পাহাড়ে নেই কাজ৷ খেটে খাওয়া মানুষদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা৷ পাহাড়ে আইপিএফটি কর্মীদের তান্ডব৷ সমতলে নব্য বিজেপি কর্মীদের আস্ফালন৷ তার মাঝে স্বদলীয় অফিস ভাঙচুর৷ ৬৫ দিনের মধ্যে বিজেপি কর্মীদের এত অসহিষ্ণু আচরণ কেন? তবে কী বিজেপি কর্মীরা চায় তাদের মর্জিমত সরকার রাজ্য চালাক৷ কর্মীদের কোনও কাজ অপছন্দ হলে তারা ভাঙচুর করবে- এ কেমন সংসৃকতি৷ এমন সংসৃকতির আড়ালে যে বিজেপি সরকারের সর্বনাশ লুকিয়ে থাকতে পারে৷ এমন আচরণ নতুন সরকারের জন্য কোনও ভাবে মঙ্গলদায়ক নয়৷ এরই মধ্যে মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ৷ কেননা, সরকার পাল্টালেও সেই সমথর্ককরা এই সরকারের সমর্থনে লম্ফঝম্ফ দিচ্ছে৷ তাইতো পট পরিবর্তন হলেও মানসিকতার পরিবর্তন হয়নি৷ ফন্দি ফিকিরের মতলবে আছে অনেকে৷ এবং তাদেরকে নিয়ে আম জনতার ক্ষোভ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *