নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ এপ্রিল৷৷ নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিয়ে শিক্ষা দপ্তরে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে৷ চাপের মুখে অবেশেষে এলিমেন্টরি এডুকেশনের শিক্ষকদের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিতে রাজি হয় দপ্তর৷ এলিমেন্টরি এডুকেশনের আশি জন শিক্ষক শিক্ষিকা স্নাতক শিক্ষক পদে চাকুরীর জন্য নো অবজেকশন সার্টিফিকেটের আবেদন জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে৷ কিন্তু, তাঁদের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না বলে জানানোর প্রেক্ষিতে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়৷ সম্প্রতি টিচার্স রিক্র্যুটম্যান্ট বোর্ড, ত্রিপুরা এসটিজিটি শিক্ষক নিয়োগের জন্য টেট উত্তীর্ণদের নথিপত্র যাচাই করার জন্য দিনক্ষণ ঘোষণা করে৷ ১০ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে টেট উত্তীর্ণদের নথিপত্র যাচাই করার নির্দেশিকা জারী করা হয়েছে৷ তাতে, এলিমেন্টরি এডুকেশনে নিযুক্ত কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকা ঐ পদে টেট উত্তীর্ণ হওয়ায় নথিপত্র যাচাইয়ের জন্য নো অবজেকশন সার্টিফিকেট চেয়ে আবেদন জানান সংশ্লিষ্ট দপ্তরে৷ কিন্তু, দীর্ঘ তালবাহানার পর তাঁদেরকে জানানো হয় নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না৷ এরই জেরে বৃহস্পতিবার এলিমেন্টরি এডুকেশনের আশি জন শিক্ষক শিক্ষিকা দপ্তরে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিতে হবেই বলে জেদ ধরে বসেন৷ তাঁদের বক্তব্য ১০৩২৩ জন চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে নো অবজেকশন সার্টিফিকেটের প্রয়োজনীয়তা নেই বলে রাজ্য সরকার ছাড় দিয়েছে৷ সেক্ষেত্রে তাঁদের বেলা ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন শিক্ষক শিক্ষিকারা৷ তাঁদের বক্তব্য, এসটিজিটি শিক্ষক পদে সুযোগ পেয়েও চাকুরী না নিলে ভবিষ্যতে পদোন্নতী জুটবে না তাঁদের কপালে৷ এমনকি সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষকের পদ হাসিল করার জন্য পরীক্ষাতেও তাঁরা বসতে পারবেন না৷ তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না ঐ আশি জন শিক্ষক শিক্ষিকারা৷ কিন্তু, দপ্তর কোন সুনির্দিষ্ট যুক্তি না দেখিয়েই তাঁদেরকে এলিমেন্টরি এডুকেশনেই শিক্ষকতা করতে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়৷ এদিন সকাল থেকে আশি জন শিক্ষক শিক্ষিকা দপ্তরে হাজির হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন৷ তাঁদের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট না দেওয়া হলে প্রয়োজনে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও হুমকি দেন৷ দুপুর নাগাদ তাঁদেরকে জানানো হয় দপ্তরের অধিকর্তা অফিসে আসেননি৷ তাই এখন তাঁদের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া সম্ভব নয়৷ কিন্তু, ঐ আশিজন শিক্ষক শিক্ষিকারাও নাছোড়বান্দা৷ তাঁরাও জানিয়ে দেন আজ নো অবজেকশন সার্টিফিকেট না নিয়ে কেউ বাড়ি ফিরবেন না৷ অবশেষে প্রবল চাপের মুখে সন্ধ্যা নাগাদ কয়েকজনকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে৷ বাকিদের আগামীকাল দেওয়া হবে বলে দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে৷ এদিকে, শিক্ষকদের নিয়ে মহা সমস্যায় পড়েছে রাজ্য সরকার৷ সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরী বাতিল হওয়ায় বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষকের ঘাটতি বিরাট সংখ্যায় দেখা দিতে পারে বলে চিন্তিত রাজ্য সরকার৷ এরই মাঝে আশি জন শিক্ষক শিক্ষিকা এলিমেন্টরি এডুকেশন থেকে এসটিজিটি শিক্ষক পদে চাকুরী পেয়ে গেলে প্রাথমিক শিক্ষায় তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে৷ ফলে, তাঁদের ঠেকানো যায় কিনা সেই পরিকল্পনায় ছিল দপ্তর৷ কিন্তু, পরিণতি ভয়ানক হতে পারে আঁচ করতে পেরে তড়িঘড়ি তাদের হাতে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিতে শুরু করল দপ্তর৷
2017-04-07

