কলকাতা, ১৪ ডিসেম্বর: লিওনেল মেসির কলকাতা সফরে সল্টলেক স্টেডিয়ামে চরম বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পর, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারির দাবি তুললেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ এমন একটি রাজ্য যেখানে কিছুই অনুমান করা যায় না। এখানে ভিআইপি সংস্কৃতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। মেসি বিশ্বব্যাপী একজন আদর্শ, অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মসমালোচনা করা উচিত। বাংলায় প্রতিদিন নিরীহ মানুষদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে, যা উদ্বেগের বিষয়।”
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও অভিযোগ করেন, “মেসির ট্যুরের সময় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল। এই ঘটনায় দায়ী রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশ কমিশনারকে গ্রেফতার করা উচিত ছিল। এটি ভিআইপি কালচারের ফলস্বরূপ।”
তিনি মেসির অনুষ্ঠানের পরিস্থিতি নিয়ে আরও বলেন, “গুয়াহাটিতে জুবিন গর্গের মৃত্যুর পর প্রায় ১০ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, কিন্তু সেখানে কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। পোস্ট ম্যালোনের অনুষ্ঠানও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মুম্বাইতে মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনালেও কোনও বিশৃঙ্খলা ছিল না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ভিআইপি কালচার এতো বেশি, যে কিছুই অনুমান করা যায় না।”
১৩ ডিসেম্বর, সল্টলেক স্টেডিয়ামে মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে একাধিক বিশৃঙ্খলা ঘটে। মেসি মাঠে ২০ মিনিট ছিলেন এবং এই সময়ে তাঁর চারপাশে প্রায় ৮০ জনের মতো ভিআইপি ও পুলিশের উপস্থিতি ছিল। এর ফলে হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কাটা সাধারণ দর্শকরা মেসিকে দেখতে পারেননি। অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার মধ্যে মেসিকে স্টেডিয়াম থেকে টানেল দিয়ে বের করে নেওয়া হয় এবং জনতা মাঠে ঢুকে পড়লে পুলিশি লাঠিচার্জ শুরু হয়। মেসির উপস্থিতিতে নানা ধরনের অস্থিরতা দেখা যায়, যার ফলে ভাঙচুর, ছেঁড়া ফ্লেক্স, ভাঙা চেয়ার এবং কার্পেট নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
মেসি মাঠ ছাড়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলার বদনাম হওয়ার জন্য মেসির কাছে ক্ষমা চান।
এ ঘটনার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ও ভিআইপি কালচারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আলোচনা তীব্র হয়ে উঠেছে।

