কলকাতা, ১৩ ডিসেম্বর : আজ সকালে কলকাতায় হাজার হাজার ফুটবল প্রেমী মেসির একটি ঝলক দেখার জন্য এসে জমায়েত হয়েছিলেন। কিন্তু যা একটি জীবনের বিশেষ সুযোগ হওয়া উচিত ছিল, তা পরিণত হলো এক দুঃস্বপ্নে।
আজ সকালে মেসি তার তিন দিনের ভারত সফরের প্রথম পর্বে কলকাতায় পৌঁছান। তিনি শহরে এসে নিজের একটি মূর্তি উন্মোচন করেন এবং তারপর সল্ট লেক স্টেডিয়ামে পৌঁছান। যেখানে হাজার হাজার ভক্ত তার প্রিয় ফুটবল আইকনকে এক নজর দেখতে এসেছিলেন। তবে, মেসির উপস্থিতির পরও, ভিড়ের মধ্যে তাকে একটুও দেখতে পেলেন না অনেকেই। যার ফলে ক্ষুব্ধ ভক্তরা বিক্ষোভ শুরু করেন এবং স্থানীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভুয়ো আওয়াজ তোলেন। কিছু দর্শক চেয়ার ও বোতল মাটিতে ছুঁড়ে ফেলেন।
ভক্তদের ক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে এবং স্টেডিয়ামের অবকাঠামোতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ে, অনেকেই মাঠে ঢুকে পড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও রায়ট কন্ট্রোল ফোর্সকেও মাঠে নামাতে হয়। মেসির স্টেডিয়ামের মধ্যে সংক্ষিপ্ত উপস্থিতি শেষ করে তাকে দ্রুত আয়োজকদের মাধ্যমে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইভেন্টের বিশৃঙ্খলার পর বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “বিশ্বমঞ্চে অপমান” জানিয়ে আক্রমণ করতে শুরু করে। বিজেপির মুখপাত্র শহজাদ পুণাওয়ালা বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ইভেন্টও সঠিকভাবে আয়োজন করতে পারেননি।” এরপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আয়োজকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন এবং টিকিটের টাকা ফেরত দেয়ার আদেশ দেন। তিনি মেসি এবং তার ভক্তদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং শাস্তি হিসেবে আয়োজক শতমুদ্র দত্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সিনিয়র নেতা কুনাল ঘোষ এই ঘটনাকে কলকাতার জন্য লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এটি কলকাতার সম্মান বাড়ায়নি। কেন মেসি দর্শকদের সামনে দেখা যাচ্ছিল না? শুধুমাত্র টাকা, ব্যবসা? কলকাতা লজ্জিত হয়েছে। দর্শকদের ক্ষোভ যৌক্তিক।”
এদিকে, রাজ্য সরকার ঘটনাটি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত, কারণ কিছু মাস পরেই রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

