বিলাসপুর, ৪ নভেম্বর : ছত্তিশগড়ের বিলাসপুর রেলস্টেশনের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে বিলাসপুর-কাটনি রেলসেকশনে একটি লোকাল মেমু ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকা একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খায়। সংঘর্ষের তীব্রতায় একাধিক কোচ লাইনচ্যুত হয়, ফলে ওই রুটে রেল চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে যে মেমু ট্রেনটি সিগন্যাল অতিক্রম করেই পেছন থেকে পণ্যবাহী ট্রেনটির সঙ্গে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষে ওভারহেড তার ও সিগন্যালিং সিস্টেম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে রেলওয়ে রেসকিউ টিম, আরপিএফ কর্মী ও স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছত্তিশগড়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী শ্যাম বিহারী জয়সওয়াল জানিয়েছেন, “এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। পাঁচজন গুরুতর আহত, তিনজন স্থিতিশীল, আর দুজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। এখনও কয়েকজন যাত্রী ট্রেনের ভেতরে আটকে আছেন, যাঁদের উদ্ধারে কাটিং যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।”
ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেব সাই ঘটনাটিকে “অত্যন্ত মর্মান্তিক” বলে অভিহিত করেছেন। এক্স-এ দেওয়া বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, “আমি বিলাসপুর জেলা কালেক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি এবং দ্রুত ত্রাণ ও সহায়তার নির্দেশ দিয়েছি। রাজ্য সরকার দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে আছে।”
রেল প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের ৫ লক্ষ টাকা এবং সামান্য আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে অনুদানের ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘটনার কারণ নির্ধারণে রেল নিরাপত্তা কমিশনার-এর নেতৃত্বে একটি বিস্তারিত তদন্ত শুরু হবে।
রেল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার ফলে বেশ কিছু ট্রেনের গতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। রেল চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে এবং দ্রুত উদ্ধার ও পুনরুদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে। রেলওয়ে কন্ট্রোল অফিসগুলির মধ্যে সমন্বয় করে যত দ্রুত সম্ভব ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
দুর্ঘটনা সংক্রান্ত তথ্য ও সহায়তার জন্য যাত্রী ও তাঁদের পরিবারের উদ্দেশ্যে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে বলে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

