আগরতলা, ১ নভেম্বর : উত্তর ত্রিপুরা জেলার পক্ষ থেকে ত্রিপুরা ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের উদ্যোগে সাত দফা দাবি সম্বলিত এক গণ ডেপুটেশন আজ জেলা শাসকের নিকট প্রদান করা হয়। সংগঠনের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক ক্ষেতমজুর ও শ্রমজীবী মানুষ জেলা প্রশাসনিক ভবনে উপস্থিত হয়ে তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।
ত্রিপুরা ক্ষেতমজুর ইউনিয়ন উত্তর জেলা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের ক্ষেতমজুরদের জন্য বছরে ২০০ দিনের কাজের নিশ্চয়তা এবং দৈনিক ৩৪০ মজুরি নির্ধারণ এই ডেপুটেশনের মূল দাবি ছিল। সংগঠনের অভিযোগ, রাজ্যে কর্মসংস্থানের অভাব চরমে পৌঁছেছে। অধিকাংশ কাজ এখন মেশিনের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে, ফলে গ্রামীণ শ্রমজীবী মানুষের হাতে আয় কমে গেছে, তাঁরা চরম আর্থিক সংকটে দিন কাটাচ্ছেন।
ডেপুটেশনে জানানো হয়, ২০১৮ সালের আগে বছরে যেখানে ৯৪ থেকে ৯৫ দিনের কাজ পাওয়া যেত, বর্তমানে তা নেমে এসেছে মাত্র ৪৫ থেকে ৫৫ দিনে। সংগঠনের বক্তব্য, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ২০০ দিনের কাজ ও ₹৩৪০ মজুরির প্রতিশ্রুতি দিলেও, আট বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
এছাড়াও সংগঠন অভিযোগ করেছে, পাকা ঘর প্রকল্পে রাজনৈতিক বিদ্বেষের কারণে বহু গরিব মানুষের নাম **জিও ট্যাগিং তালিকা** থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে আধার-ভিত্তিক পেমেন্ট ব্যবস্থার ফলে অনেক ক্ষেতমজুর তাঁদের প্রাপ্য মজুরি পাচ্ছেন না; অনেকের টাকা ব্যাংকে আটকে আছে বলে জানানো হয়েছে।
সংগঠনের সাত দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, সকল বাদ পড়া জব কার্ড পুনর্বহাল করা, শহরাঞ্চলের টু-ই প্রকল্পে মজুরি বৃদ্ধি ও কাজের দিন বাড়ানো, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় বন্ধ থাকা ৫০ হাজার ভাতা পুনরায় চালু করা, ৬০ বছরোর্ধ্ব সকল ক্ষেতমজুরকে ভাতা প্রদান** এবং নতুন ভাতার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করা।
ডেপুটেশনের শেষে সংগঠনের প্রতিনিধি দল জেলা শাসকের হাতে লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি দাবিগুলি দ্রুত পূরণ না হয়, তবে বৃহত্তর গণআন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হবে ক্ষেতমজুর সমাজ।

