নয়াদিল্লি, ২৬ অক্টোবর : ভারতের উপরাষ্ট্রপতি সি.পি. রাধাকৃষ্ণন আজ রবিবার সেশেলসের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডঃ প্যাট্রিক হারমিনির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশ ত্যাগ করেছেন। এই সফরকে ভারত ও সেশেলসের মধ্যে গভীর, ঐতিহাসিক ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও মজবুত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, সফরের সময় উপরাষ্ট্রপতি রাধাকৃষ্ণন প্রেসিডেন্ট হারমিনিকে ভারতের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাবেন এবং দুই দেশের দীর্ঘদিনের বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক পুনর্ব্যক্ত করবেন। মন্ত্রক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ লিখেছে, “ভারত-সেশেলস দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে উপরাষ্ট্রপতি সি.পি. রাধাকৃষ্ণন সেশেলসের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডঃ প্যাট্রিক হারমিনির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য রওনা হয়েছেন।”
বিদেশ মন্ত্রকের শুক্রবার প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, “সেশেলস ভারতের ‘ভিশন মহাসাগর’ এবং গ্লোবাল সাউথের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির অধীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এই সফর সেশেলসের সঙ্গে ভারতের অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করার গভীর প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে।”
ভারত ও সেশেলসের সম্পর্ক বহু পুরনো। ১৭৭০ সালে পাঁচজন ভারতীয় চাষী শ্রমিক সাতজন আফ্রিকান দাস এবং ১৫ জন ফরাসি উপনিবেশিকদের সঙ্গে সেশেলসে পৌঁছানোর পর থেকেই ভারতীয় সম্প্রদায়ের অবদান শুরু হয়। আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় ১৯৭৬ সালে। ২৯ জুন ১৯৭৬-এ সেশেলস স্বাধীনতা লাভের সময় ভারতীয় নৌবাহিনী জাহাজ আইএনএস নীলগিরির একটি টিম স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা, সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্চ ২০১৫-এ সেশেলসের ঐতিহাসিক সফর করেছিলেন। এটি ৩৪ বছরে কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর ছিল। এই সফরের সময় চারটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়, যার মধ্যে রয়েছে কস্টাল রাডার সিস্টেম প্রকল্পের উদ্বোধন, সেশেলসকে দ্বিতীয় ডর্নিয়ার বিমান উপহার দেওয়ার ঘোষণা এবং সেশেলসের নাগরিকদের ভারত সফরের জন্য তিন মাসের ফ্রি ভিসার সুবিধা।
উপরাষ্ট্রপতির এই সফরকে ভারতের “সাগর নীতি” অনুসারে হিন্দ মহাসাগরীয় অঞ্চলে সহযোগিতা ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

