টিকিট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রতীক ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ! আরজেডি-তে টালমাটাল পরিস্থিতি, তেজস্বীর প্রত্যাবর্তনের পর চাঞ্চল্য

পাটনা, ১৪ অক্টোবর: বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এ নাটকীয় ঘটনা ঘটল। সোমবার সন্ধ্যায় যেসব নেতাদের নির্বাচনী প্রতীক (সিম্বল) দেওয়া হয়েছিল, গভীর রাতে হঠাৎ করেই তাদের সেই প্রতীক ফেরত দিতে বলা হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই নির্দেশ আসার কয়েক ঘণ্টা আগেই আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব দিল্লি থেকে পাটনা ফিরে আসেন। তাঁর বাড়ির বাইরে তখন অনেক প্রার্থী-আকাঙ্ক্ষী ভিড় করেছিলেন। যাঁরা তখন দলের নেতাদের ফোন পেয়ে ভিতরে ঢোকেন, তাঁদের হাতে হলুদ খামে থাকা প্রতীক সংক্রান্ত কাগজ তুলে দেওয়া হয় বলে জানা যায়।

কিন্তু পরবর্তী চমক আসে রাতেই, যখন মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদব দিল্লি থেকে পাটনায় পৌঁছন। এরপরই যাঁরা সন্ধ্যায় প্রতীক পেয়েছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককে ফোন করে জানানো হয়—প্রতীক ফিরিয়ে দিতে হবে। রাতেই লালু যাদবের বাসভবনের বাইরে আবার ভিড় জমে, তবে এবার প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।

আরজেডির নেতারা বলছেন, দলীয় নেতৃত্ব এখনও পরিষ্কারভাবে কিছু জানায়নি কেন হঠাৎ প্রতীক ফিরিয়ে নেওয়া হলো। বেশ কয়েকজন নেতা প্রকাশ্যে বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি অস্বচ্ছ এবং বিভ্রান্তিকর।

সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আশরাফ ফাতমি দাবি করেন, কেউই আসলে প্রতীক পাননি, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবিগুলো ভাইরাল হয়েছে তা “এআই-প্রস্তুত”।

যাঁরা সন্ধ্যায় প্রতীক পেয়ে রাতে ফেরত দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দল (ইউ)-ত্যাগী নেতা সুনীল সিং এবং প্রাক্তন বিধায়ক নারায়ণ সিং ওরফে বোগো।

এই নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহ এমন এক সময়ে ঘটল, যখন মহাগঠবন্ধনের দলগুলির মধ্যে এখনও আসন বণ্টন নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। আরজেডির জোটসঙ্গীদের মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস, বামপন্থী দলগুলি, মুকেশ সহনির বিকাশশীল ইনসান পার্টি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং পাসুপতি পারসের নেতৃত্বাধীন আরএলজেপি। সব দলই বর্তমানে নিজেদের পছন্দমতো আসনের জন্য চাপ তৈরি করছে।

প্রথম দফার ভোট হবে ৬ নভেম্বর এবং দ্বিতীয় দফা ১১ নভেম্বর। প্রথম দফার মনোনয়নের শেষ দিন ১৭ অক্টোবর (শুক্রবার), আর দ্বিতীয় দফার জন্য মনোনয়ন জমার শেষ তারিখ ২০ অক্টোবর। ফলাফল ঘোষণা হবে ১৪ নভেম্বর।

এই পরিস্থিতিতে আরজেডি-র টিকিট প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এবং রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে—তেজস্বী যাদবের প্রত্যাবর্তনের পর কী বড় কোনও সিদ্ধান্তের বদল হয়েছে? দলের অভ্যন্তরে কি মতবিরোধ বাড়ছে? এই প্রশ্নগুলির উত্তর আপাতত অজানা।