আগরতলা, ১২ অক্টোবর : আজ দুপুরে সিপিআই(এম) রাজ্য দপ্তর ‘দশরথ দেব স্মৃতি ভবন’, মেলারমাঠে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, আরএসপি রাজ্য সম্পাদক দীপক দেব, সিপিআই রাজ্য সম্পাদক মিলন বৈদ্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা পরেশ সরকার এবং প্রাক্তন মন্ত্রী নরেশ জমাতিয়া।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে জানান, জিরানিয়ায় একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে তাঁকে বাধার মুখে পড়তে হয়। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের মুখে। আমি ওই অনুষ্ঠানে না গিয়েই ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি। তিনি আরও জানান, বিধানসভা এলাকার স্থানীয় বিধায়ক ও মন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।নিএই ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে বামফ্রন্ট নেতৃত্বরা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, প্রশাসনিক পক্ষপাত ও শাসকদলের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন।
এদিন, এসআইআর নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন প্রাক্তন মন্ত্রী নরেশ জমাতিয়া। তাঁর অভিযোগ, “নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতার ভূমিকা হারিয়ে শাসকদলের পক্ষে কাজ করছে।”
এছাড়া বামফ্রন্ট নেতৃত্বরা অভিযোগ করেন, দুর্গাপূজার আগে রেগা ও টুয়েপ প্রকল্পের কাজ বন্ধ রেখে সরকার সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের আনন্দে জল ঢেলেছে। এভাবে রাজ্য সরকার শ্রমজীবী মানুষদের দুর্দশার মধ্যে ফেলেছে বলে দাবি করা হয়।
মানিক দে বলেন, একদিকে বিজেপি সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করছে, অন্যদিকে রাজ্যের জাতি-জনজাতির ঐক্য নষ্ট করতে উস্কানিমূলক মন্তব্য করছে। একইভাবে কিছু বাঙালি সংগঠনও উস্কানিমূলক কর্মসূচি পালন করছে, যা সামাজিক সম্প্রীতির পরিপন্থী।
তিনি আরও যোগ করেন, বামফ্রন্ট সবসময়ই ঐক্য, শান্তি ও গণতান্ত্রিক সহাবস্থানের পক্ষে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যে এক পরিকল্পিত বিভাজনের রাজনীতি চলছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। সাংবাদিক সম্মেলনে বামফ্রন্ট আহ্বায়ক মানিক দে বলেন, ত্রিপুরায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষা ও প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনাই এখন সবচেয়ে বড় লড়াই।
সাংবাদিক সম্মেলনের শেষে বামফ্রন্ট নেতৃত্বরা রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানান — শান্তি, আইনশৃঙ্খলা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

