আগরতলা, ৮ অক্টোবর : ত্রিপুরায় তৃণমূলের মূল গজাবে না। এর আগেও বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে। কারণ ওঁদের মতো অনুপ্রবেশকারীদের এরাজ্যে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশীদের সমর্থনেই ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ প্রদেশ কার্যালয় সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রদেশ বিজেপি মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করছে। তাদের সমর্থনেই ক্ষমতায় টিকে আছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি বিধায়ক এবং সাংসদ বন্যাদুর্গত এলাকায় সাধারণ মানুষের সহায়তার জন্য সেবার জন্য এগিয়ে গেছিলেন। কিন্তু সেখানে তৃণমূল সমর্থকদের দ্বারা তারা গুরুতরভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রশাসন সেখানে থাকা সত্ত্বেও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
এদিকে বিমানবন্দরে আসার পর তৃণমূল সমর্থকরা অভিযোগ করেন বিজেপির হুমকিতে তাদের গাড়ি দেওয়া হচ্ছে না। বিমানবন্দরে বসেই বিক্ষোভ দেখান তারা। এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে খন্ডিত করেছে প্রদেশ বিজেপি। নবেন্দু ভট্টাচার্য – এর দাবি, দলীয় কোন কর্মসূচিতে যদি দলের নেতৃত্বরা অন্য রাজ্যে যান সেক্ষেত্রে দলের তরফ থেকেই তাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে গেলেও সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তাই তাদের সঙ্গে সাংসদ থাকলেও তারা কোন সরকারি কর্মসূচিতে আসেননি। এসেছিলেন দলীয় কাজে, তাই তাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করার দায় সরকারের নয়। আর প্রশাসন তাদের বিমানবন্দরে বাধা দিয়েছিলেন কারণ তাদের এবং রাজ্যের জনগণের সুরক্ষার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব প্রশাসনের। এর আগেও তৃণমূল নেতৃত্বরা রাজ্যে এসেছেন, সে সময় বহু অপ্রীতিকর ঘটনার সাক্ষী ছিল রাজ্য। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেজন্যই এদিন প্রশাসন তাদের কাছে কিছুটা সময় চাইছিলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য। কিন্তু সেখানেও তারা জল ঘোলা করার চেষ্টা করেছেন।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে ভাঙচুরের প্রসঙ্গে বিজেপি প্রদেশ মুখপাত্র জানান, গতকালের এই বিক্ষোভ ছিল বিজেপির ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু তৃণমূলের পার্টি অফিসে গতকাল বিজেপি সমর্থক দ্বারা কোনো ভাঙচুর করা হয়নি। শুধুমাত্র বাইরে থাকা ফ্লাগ ফেস্টুনগুলি ছুড়ে ফেলা হয়েছে। তিনি অকপটে স্বীকার করেন, উত্তরবঙ্গে বিজেপি বিধায়ক এবং সংসদের উপর হামলার ঘটনায় প্রদেশ বিজেপি ক্ষুব্ধ হয়েছে। তাই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ জানাতে তারা তৃণমূল রাজ্য কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পাশাপাশি বাইরে থাকা ফ্লাগ ফেস্টুনগুলি করে ফেলেছেন বিজেপি সমর্থকরা। সেখানে কোন ধরনের ভাঙচুর করা হয়নি। পাশাপাশি তখন ওই কার্যালয়ে বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষে ছাড়া কোন দলীয় কর্মীও ছিলেন না।
তিনি আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি বর্তমানে ভয়ংকর জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিকে নিয়ে গোটা বাঙালি জাতির গর্ববোধ করতো। কিন্তু সে সংস্কৃতিকে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। চুরি, কেলেঙ্কারি, চিটফান্ড সহ বিভিন্ন কলঙ্কে গোটা রাজ্যকে কালিমা লিপ্ত করেছে এই দল। কুনাল ঘোষকেও ‘ চোর’ বলে সম্বোধন করেছেন তিনি। তবে পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিজেপি রয়েছে এমনটাই দাবি করলেন প্রদেশ বিজেপি মুখপাত্র।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে প্রদেশ বিজেপি সহ সভানেত্রী পাপিয়া দত্ত বলেন, উত্তরবঙ্গের মানুষ যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভয়াবহভাবে দিন কাটাচ্ছেন, বহু মানুষ বাড়িঘর ছাড়া, প্রাণহানি ঘটেছে অনেকের, এরকম একটি সংকটজনক অবস্থায় তৃণমূল নেতৃত্বদের যখন উত্তরবঙ্গে থাকার কথা তখন তারা অন্য রাজ্যে এসে নাটক মঞ্চস্থ করছেন। তার থেকেই সাধারণ জনগণের পাশে তারা কতটুকু রয়েছেন তার প্রমাণ মিলছে। পাশাপাশি তিনি তৃণমূলের রাজ্যের সংগঠনের শক্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

