নয়াদিল্লি, ৬ অক্টোবর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উড়ান প্রকল্পের আওতায় বিহারের পুরনিয়া বিমানবন্দর উদ্বোধন করায় সীমাঞ্চল অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। একসময়ের ধূলিমাখা গ্রামীণ পথ ও বুলকাটের চিত্রে পরিচিত পুরনিয়া আজ দেশের বিমান মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে।
নতুন বিমানবন্দর খুলে দেওয়ার মাধ্যমে সীমাঞ্চল, কোসি ও ভাগলপুরের প্রায় দুই কোটি মানুষ ব্যবসা, পর্যটন এবং কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ পাচ্ছে। এটি বিহারের চতুর্থ বিমানবন্দর হিসেবে পাটনা, গয়া ও দরভাঙ্গার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বিমানবন্দর নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ চালু হয়েছে, শিগগিরই দিল্লি ও আহমেদাবাদ রুটও শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে আরও একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা হয়েছে। ভাগলপুরের পিরপাইনতিতে ২৫,০০০ কোটি টাকার ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্প, কোসি-মেচি নদী সংযোগ প্রকল্পের প্রথম ধাপ এবং আরারিয়া-গালগালিয়া রেললাইন সহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্প উদ্বোধন বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বিক্রমশীলা-কাতারিয়া ট্র্যাকের জন্য ২,১৭০ কোটি ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন বন্দে ভারত ও অমৃত ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশনের আওতায় পুরনিয়ায় সেক্স-সোর্টেড সিমেন ইউনিটও স্থাপন করা হয়েছে।
উড়ান প্রকল্পের অধীনে মাত্র পাঁচ মাসে নির্মিত এই বিমানবন্দরটি, ভারতীয় আঞ্চলিক উড়ানের ধারণাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। ২০১৬ সালের ২১ অক্টোবর চালু হওয়া উড়ান প্রকল্পের ফলে ২০১৪ সালে ৭৪টি বিমানবন্দর থেকে ২০২৫ সালে সংখ্যা বেড়ে ১৬০-এর বেশি হয়েছে। স্বল্পমূল্যের আঞ্চলিক ফ্লাইটে প্রায় ১.৪৯ কোটি যাত্রী যাত্রা করেছেন এবং প্রায় ৩ লক্ষাধিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে।
পুরনিয়া বিমানবন্দর ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলো সীমাঞ্চলকে দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি পর্যটন, কৃষিপণ্য বাণিজ্য এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগের প্রসার ঘটাবে। মাখানা, পাট ও কলা উৎপাদন দ্রুত বাজারে পৌঁছাবে, এবং স্থানীয় কর্মসংস্থান বাড়বে। নেপাল সীমান্ত এলাকার জন্যও এই সংযোগ নতুন বাণিজ্যিক সুযোগের দরজা খুলেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর উড়ান প্রকল্প কেবল আকাশপথের উন্নয়ন নয়, এটি গ্রামীণ ভারতকে নগর ভারতের সঙ্গে যুক্ত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। নির্বাচনের প্রাকপ্রসঙ্গে এই বিমানবন্দর ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলি সীমাঞ্চলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুফল বয়ে আনবে।
_______

