ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির প্রথম জনসমক্ষে উপস্থিতি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর

তেহরান, ৬ জুলাই : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি শনিবার প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে হাজির হয়েছেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর তার এটি ছিল প্রথম জনসমক্ষে উপস্থিতি। তিনি রাজধানী তেহরানে আশুরা উপলক্ষে একটি শোকসভায় অংশ নেন। তার উপস্থিতির সময় তিনি কোনো বক্তব্য দেননি, তবে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন তাকে অনুষ্ঠান হলের মধ্যে প্রবেশ করতে দেখায়, যেখানে তিনি হাত নেড়ে এবং উপস্থিত জনতাকে সম্মান জানান।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির দীর্ঘ অনুপস্থিতি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের সময়ে বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল, বিশেষ করে তার নিরাপত্তা নিয়ে অনেক জল্পনা তৈরি হয়েছিল। খামেনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দেশের সবকিছুতে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব ধারণ করেন, এবং তিনি সরকারী এবং সামরিক সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ইরান সরকার যুদ্ধের ফলে ৯০০ জনের বেশি মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। এছাড়া, ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার নিরীক্ষকদের ওই ক্ষতিগ্রস্ত পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে।
খামেনি তেহরানে তার সরকারি বাসভবন ও অফিসের নিকটে অবস্থিত একটি মসজিদে আশুরা শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন। এই অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়, এবং এতে ইরানের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইরানের শিয়া মুসলিমদের জন্য আশুরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবস, যা হুসেইনের শাহাদতের স্মরণে পালিত হয়। হুসেইন, যিনি মুহাম্মদ (সা.)-এর নাতি ছিলেন, তার মৃত্যু শিয়া বিশ্বাসের মধ্যে গভীর আবেগ ও ধর্মীয় চেতনা সৃষ্টি করেছে।
যুদ্ধটি ১৩ জুন শুরু হয়, যখন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক সুবিধা, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের উপর ব্যাপক হামলা শুরু করে।
ইরান প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৫৫০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে ছুঁড়ে দেয়। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র আটক করা হয়েছে, তবে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বুড়ো অতিক্রম করতে সক্ষম হয় এবং ২৮ জনের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
—————————–