হিমাচলে বৃষ্টির তাণ্ডব : এখনও নিখোঁজ ৩৪, তৃতীয় দিনে ফের শুরু উদ্ধার অভিযান

শিমলা, ৩ জুলাই : হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত ও মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় নিখোঁজ ৩৪ জনকে খোঁজার জন্য বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনে ফের শুরু হয়েছে উদ্ধার তল্লাশি অভিযান। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত কাংগ্রা, মান্ডি, হামিরপুর, শিমলা, সিরমৌর ও সোলন জেলায় মাঝারি মাত্রার আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

ভেঙে পড়া রাস্তা এবং টানা বৃষ্টির মধ্যেই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) বুধবার এক গর্ভবতী মহিলাকে পালকিতে চাপিয়ে বহু কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মান্ডির থুনাগ এলাকার একটি হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছে। এভাবেই তাঁরা সাহস ও মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

মঙ্গলবারের প্রবল বৃষ্টিপাতে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। শুধুমাত্র মান্ডি জেলাতেই ১৪টি সেতু, ১৪৮টি বাড়ি ও দুটি দোকান ভেসে গেছে। এখনো পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১। নিখোঁজদের দীর্ঘসময় পেরিয়ে যাওয়ায় মৃত্যুর আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। হিমাচল প্রদেশ স্টেট এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মোট ১৫৭ জনকে পাঁচটি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

বুধবার মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সুক্কু মান্ডির ধর্মপুরে লৌঙ্গানি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সিয়াথি গ্রাম পরিদর্শন করেন। সেখানে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের কষ্টের কথা শোনেন এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজ খতিয়ে দেখেন। জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে ১.৭০ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা, রেশন, ত্রিপল এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার আপনাদের পাশে আছে এবং সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।

গ্রামের বাসিন্দারা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, কীভাবে এক লহমায় গোটা গ্রাম জল ও কাদার তোড়ে ভেসে গেছে। এখন তো এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছি, একটা তাবু খাটানোর মতো জায়গাও অবশিষ্ট নেই, বলেন একজন স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি আরও বলেন, আমরা অনেকেই মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। যারা বেঁচে আছি, তারা প্রত্যক্ষ করেছি সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য।