ভারতীয় বন্দিদের মুক্তি ও প্রত্যাবর্তন দ্রুততর করতে পাকিস্তানকে আহ্বান জানাল ভারত

নয়াদিল্লি, ১ জুলাই : ভারত সরকার মঙ্গলবার পাকিস্তানের কাছে ভারতীয় নাগরিক ও নৌকা সহ মৎস্যজীবীদের এবং নিখোঁজ ভারতীয় প্রতিরক্ষা কর্মীদের দ্রুত মুক্তি ও প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। দু’দেশই প্রতি বছরের মতো এবারও ১ জানুয়ারি ও ১ জুলাই কনস্যুলার অ্যাক্সেস সংক্রান্ত ২০০৮ সালের দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় পাকিস্তানে আটক ভারতীয় এবং ভারতে আটক পাকিস্তানি নাগরিক ও মৎস্যজীবীদের তালিকা কূটনৈতিক পথে আদান-প্রদান করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাকিস্তানে সাজা সম্পূর্ণ হওয়া ১৫৯ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী ও বেসামরিক বন্দিকে দ্রুত মুক্তি ও দেশে ফেরানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। সাথে আরও জানিয়েছে, পাকিস্তানের হেফাজতে থাকা ২৬ জন ভারতীয় বলে ধারণা করা বন্দি ও মৎস্যজীবীর ক্ষেত্রে এখনো কনস্যুলার অ্যাক্সেস দেওয়া হয়নি। তাদের ক্ষেত্রেও অবিলম্বে কনস্যুলার অ্যাক্সেস চাওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত পাকিস্তানকে অনুরোধ করেছে যেন ওইসব বন্দি ও মৎস্যজীবীর নিরাপত্তা, কল্যাণ এবং মানবাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় যতদিন না তাদের মুক্তি ও প্রত্যাবর্তন সম্পন্ন হয়।

ভারত এদিন পাকিস্তানকে ৩৮২ জন বেসামরিক বন্দি এবং ৮১ জন মৎস্যজীবীর তালিকা হস্তান্তর করেছে, যারা পাকিস্তানি বা পাকিস্তানি বলে ধারণা করা হয়। অপরদিকে, পাকিস্তান জানিয়েছে তাদের হেফাজতে রয়েছে ৫৩ জন বেসামরিক ভারতীয় বন্দি ও ১৯৩ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী বা যাদের ভারতীয় বলে মনে করা হয়।

ভারত এ প্রসঙ্গে আরও জানিয়েছে, তারা পারস্পরিক বন্দি এবং মৎস্যজীবীদের মানবিক বিষয়গুলিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয় এবং পাকিস্তানে আটক বন্দিদের সুরক্ষার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়া, পাকিস্তান সরকারের কাছে ভারতে আটক ৮০ জন পাকিস্তানি বা পাকিস্তানি বলে মনে করা ব্যক্তির নাগরিকত্ব যাচাই দ্রুত শেষ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কারণ সেই যাচাই সম্পন্ন না হওয়ায় তাদের প্রত্যাবর্তন আটকে আছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, সরকারের টানা প্রচেষ্টার ফলে ২০১৪ সাল থেকে পাকিস্তান থেকে ২,৬৬১ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী এবং ৭১ জন বেসামরিক বন্দিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ফেরানো হয়েছে ৫০০ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী এবং ১৩ জন বেসামরিক বন্দিকে।

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, বিদেশে আটক ভারতীয় বন্দিদের নিরাপত্তা, কল্যাণ এবং সুরক্ষা সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। কোনো ভারতীয় নাগরিক পাকিস্তানে আটকের খবর পেলেই ভারতীয় মিশন অবিলম্বে কনস্যুলার অ্যাক্সেস চেয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এই কনস্যুলার অ্যাক্সেসের মাধ্যমে ভারতীয় হাই কমিশনের কর্মকর্তারা বন্দিদের সঙ্গে দেখা করে তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন এবং প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিস সরবরাহ করেন। আইনি সহায়তাসহ অন্যান্য সাহায্যও প্রদান করা হয়। এই প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে ভারতীয় বন্দিদের অধিকতর নিরাপত্তা ও দ্রুত মুক্তি নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রক স্পষ্ট করেছে।