নারীশক্তি বিকশিত ভারত গড়ার ভিত্তি: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ৮ মার্চ: এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলার জন্য মহিলাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একবিংশ শতাব্দীর নারী শক্তি বিকশিত ভারতের অন্যতম ভিত্তি। ৮ মার্চ আর্ন্তজাতিক মহিলা দিবস উপলক্ষে বিজেপি সদর গ্রামীন জেলা মহিলা মোর্চা আয়োজিত সাংগঠনিক বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আজকে অত্যন্ত আনন্দের দিন। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের আন্দোলনরত মহিলাদের থেকেই এই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের উত্থান। আমরা বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে একজন মহিলাকে দেখতে পাই। জনসংখ্যার ৫০ শতাংশই মহিলা। আমরা জানি ভ্রূণ হত্যা নিয়ে অনেক আন্দোলন হয়েছে। আইনগতভাবে এই বিষয়টি মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি আমরা। আইন করে ভ্রূণ হত্যার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইকোলজিক্যাল ব্যালান্স ঠিক রাখার জন্য মহিলা ও পুরুষের অনুপাত সমান সমান রাখতে হবে। আর সেই দিশায় কাজ করছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার এবং আমাদের রাজ্য সরকার।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাল্যবিবাহ রোধ করার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আমরা নানাভাবে চেষ্টা করছি। বাল্যবিবাহের ফলে ১৮ বছরের নিচে থাকা মেয়েরা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার মধ্যে পড়ে। তাই এবিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আমি এবিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বলবো মহিলা মোর্চার সভানেত্রীকে।

ডাঃ সাহা বলেন, নারী শক্তি একবিংশ শতাব্দীতে বিকশিত ভারতের অন্যতম ভিত্তি। সমাজ ও দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ নারীদের সম্মান দিয়ে শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিক নির্দেশনায় বিকশিত ভারত গড়ে তোলা ও নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলছে দেশ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৮ বছর বয়সের আগে কোনও মেয়েকে বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। আমাদের এধরণের অভ্যাস ঠেকানোর জন্য অবশ্যই কাজ করা উচিত। মহিলাদের ছাড়া সমাজ চলতে পারে না। যদি কোন মহিলা কোন পরিবার পরিচালনা করতে পারেন, তবে কেন তিনি সমাজের দায়িত্ব নিতে পারবেন না?

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ মহিলারা সব কিছু করতে পারেন। ত্রিপুরার মেয়েরা এখন বিমান উড়াচ্ছেন এবং ট্রেনে লোকো পাইলট হিসেবে কাজ করছেন। মহিলারা ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার এবং আরও অনেক পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। মহিলা ছাড়া একটি বাড়ি সুন্দর হতে পারে না। ভারতীয় জনতা পার্টিতে ক্ষমতার সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ হচ্ছেন মহিলারা। তারা দলের শক্তি। একারণেই বিজেপি মহিলা মোর্চা গঠিত হয়েছিল। আমাদের রাজ্য সরকারও মহিলাদের কল্যাণের জন্য কাজ করছে। আমরা তাদের জন্য ৩৩% সংরক্ষণ নিশ্চিত করেছি। আমাদের অবশ্যই মহিলা সংক্রান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ২০২৩ সালের নির্বাচনে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে মহিলারা যখন আমাদের পাশে রয়েছে, তখন বিজেপি সরকার গঠন করবে এবং ঠিক এটাই হয়েছিল। মহিলারা এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কাজ করছি। আমরা তাদের জন্য পিঙ্ক টয়লেটও চালু করেছি।

এদিন এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি তথা সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, সাংসদ কৃতি দেবী দেববর্মন, প্রদেশ মহিলা মোর্চার সভানেত্রী মিমি মজুমদার, সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি রবীন্দ্র রাজু, পদ্মশ্রী স্মৃতি রেখা চাকমা, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন জিমন্যাস্ট পদ্মশ্রী দীপা কর্মকার, মন্ডল সভাপতি শিবেন্দ্র দাস সহ অন্যান্য আরো অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *