শিলং, ২০ জানুয়ারি : উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে সহযোগিতা ও কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরির ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের ৭১তম প্ল্যানারি অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। গতকাল শিলংয়ে অনুষ্ঠিত উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের ৭১তম প্ল্যানারি অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু একথা বলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্ল্যানারি অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘পূবে সক্রিয় হও’ নীতিতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের বিশেষ স্থান রয়েছে। ত্রিপুরার উন্নয়নে এনইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্যপাল বলেন, সরকার ত্রিপুরাকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের গেটওয়ে হিসেবে গড়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ এবং সেই লক্ষ্যে পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, কর্পোরেট প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট, সেমিনার, কর্মশালা ইত্যাদি আয়োজনের সুবিধার্থে পর্যটন দপ্তরের অধীনে একটি কনভেনশন সেন্টার স্থাপন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। রাজ্য থেকে আগর রপ্তানির জন্য রাজ্যে একটি আগর বোর্ডও গঠন করা যেতে পারে।
অধিবেশনে রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু ফেব্রুয়ারি, ২০২৪-এর মধ্যে এইমসের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, সমস্ত প্রক্রিয়ার ডিজিটালাইজেশনের জন্য বিশেষ অনুদান প্রদান ইত্যাদির জন্য অনুরোধ জানান। তাছাড়াও তিনি নর্থ ইস্ট ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স কর্পোরেশন যাতে বাকি অর্থ প্রদান করে সেজন্য ব্যবস্থা নিতে এনইসিতে অনুরোধ জানান।
তাছাড়া রাজ্যপাল বলেন, রাজ্যে টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে এবং হাই ব্রডব্যান্ড উইদ সহ রাজ্যে ৫জি, ৬জি চালুর দাবি করেন। উত্তর পূর্বাঞ্চলের মতো পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর রাজ্যগুলিতে বিশেষ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় আইটি সম্বলিত ক্ষেত্র সহ বিভিন্ন উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প ও উন্নয়নমূলক কাজের সঠিক ধারণা দিতে বিধায়ক ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের বিভিন্ন রাজ্য সফরে পাঠানোর কথা বলেন তিনি। উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নমূলক কাজ সম্পর্কে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে তিনি এক উচ্চস্তরীয় ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের আহ্বান জানান। তিনি ত্রিপুরায় এনইসির একটি শাখা কার্যালয় খোলার বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ করেন।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) চুক্তি সম্পর্কে রাজ্যপাল বলেন, ত্রিপুরা সরকার ভারত সরকারের সড়ক যোগাযোগ ও জাতীয় সড়ক মন্ত্রকের বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যাল এগ্রিমেন্ট বিষয়ে তার অভিমত ও মন্তব্য ২০ এপ্রিল, ২০১৭ তারিখে জমা দিয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তারিখে মন্ত্রক জানিয়েছে যে, বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপাল বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যাল চুক্তিকে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের জন্য রাজি হয়েছে। ভুটানের সম্মতি এখনও আসেনি। গ্রস বাজেটারি সাপোর্ট (জিবিএস) সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলিকে জিবিএসের ১০ শতাংশ উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে সুনিশ্চিত করতে অনুরোধ করেন। ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চল থেকে জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রকে পাঠানো প্রস্তাবগুলিকে অগ্রাধিকারের সাথে বিবেচনা করার অনুরোধও জানান রাজ্যপাল।