আগরতলা, ২৬ ডিসেম্বর : অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে কত্থক নৃত্যে পর পর দুইবার স্বর্ণ পদক পেলেন শচীন দেবর্বমণ মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী অদিতি সিং। কঠিন মূর্হুতের মধ্য দিয়ে তাঁকে এই সাফল্য অর্জন করতে হয়েছে। কারণ, বাংলায় এমএ দ্বিতীয় বর্ষে তৃতীয় সেমিস্টারে পড়াকালীন মা মারা যান এবং সংগীতে এমএ দ্বিতীয় বর্ষে তৃতীয় সেমিস্টারে পড়াকালীন সময়ে তাঁর বাবা মারা যান। বিধাতার নিষ্ঠুর পরিহাস অদিতির যখন বয়স মাত্র তিন বছর তখন তাঁর মা মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ হওয়ায় পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলেন। যোগেন্দ্রনগর বর্মন টিলা এলাকার বাসিন্দা অদিতি সিং প্রমাণ করে দিয়েছেন সাফল্য অর্জনে কোন প্রতিকূলতাই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।
বড় বোন বীণাপানি সিংহের সাথেই মূলত অদিতি বেড়ে উঠেছে। কারণ, শৈশব থেকেই অসুস্থতার কারণে মায়ের আদর, ভালবাসা ও যত্ন কেনোটাই কপালে জুটেনি তাঁর। অদিতি বিদ্যাসাগর বালিকা বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেছেন। এরপর মহারানী তুলসিবতী বালিকা বিদ্যালয় থেকে দ্বাদশ মান উর্ত্তীণ হয়েছেন। উচ্চশিক্ষায় প্রথমে অদিতি বাংলায় অর্নাস এবং মাস্টার্স পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছেন। এরপর তিনি শচীন দের্ববমণ সংগীত মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। ২০২০ সালে স্নাতক স্তরে এবং ২০২২ সালে স্নাতকোত্তর স্তরে কত্থক নৃত্যে পরপর দুইবার স্বর্ণ পদক অর্জন করেছেন।
অদিতির বড় বোন বীণাপানি সিং জানিয়েছেন, শৈশব থেকেই তাঁকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন তিনি। সংসার খরচ চালাতে তিনি টিউশনি করেন। অদিতি নিজেও টিউশনির টাকায় সংসার ও পড়াশোনার খরচ বহন করে থাকেন। বর্তমানে অদিতি সরকারী বিএড কলেজে পড়াশোনা করছেন। ভবিষ্যতে কত্থক নৃত্য নিয়ে পিএইচডি করার মনোবাসনা রয়েছে তাঁর। শুধু তাই নয় শিক্ষকতার পেশাকেই তিনি বেছে নিতে চাইছেন। অদিতির এই সাফল্যে তাঁর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের পাশাপাশি এলাকাবাসীও ভীষণ খুশি এবং গর্বিত।

