এত কম ভোট নিয়ে রাজ্যের ইতিহাসে কোন সরকার ক্ষমতায় বসেনি, বিজেপিকে কটাক্ষ মানিক সরকারের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ জুলাই৷৷  পরিস্থিতির মধ্যে পরিবর্তন আসছে৷ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে নেই দেশের অবস্থা৷ তাই মানুষকে সঙ্ঘবদ্ধ করে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে দিল্লির জনগণের শত্রুদের৷ অধিকার সুরক্ষায় সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বানে জি এম পি, টি ওয়াই এফ এবং টি এস ইউ -র উদ্যোগে আগরতলা টাউন হলে আয়োজিত হল সভায় একথা বললেন পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার৷ বিধানসভার নির্বাচনে রাজ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার পরাস্ত হয়েছে৷ তাদের ভোটের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশ৷
এত কম ভোট নিয়ে রাজ্যের ইতিহাসে কোন সরকার ক্ষমতায় বসেনি৷ তবে এটাও করতে পারত না যদি জনজাতিদের সাথে প্রতারণা করা নব্য সংগঠন৷ আর এটা বিজেপি, আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ভালো করেই বুঝতে পারছে যদি জনজাতি অংশের মানুষের একটা অংশের ভোট সাধারণ অংশের ভোটের সাথে নিয়ে বিভ্রান্ত না করা যেত তাহলে ক্ষমতায় বসা সম্ভব হতো না৷ এটা তাদের পরাজয় বলে তারাও মেনে নিচ্ছে৷ বিজেপি এবং তিপ্রা মথাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে এই কথাই বললেন শ্রী সরকার৷ ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বিধানসভা বাজেট প্রসঙ্গে পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার বলেন এটা একটা জনবিরোধী বাজেট৷ এর মধ্যে জনগণের জন্য কিছুই নেই৷ ২০১৮ সালে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সময় ঋণ ছিল ১২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, পাঁচ বছরে বর্তমান জোট সরকারের ঋণ ২৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা৷ কিন্তু পাঁচ বছরে রাস্তা ঘাট, বিদ্যুৎ, জল কিছুই করেনি এই সরকার৷ চারিদিকে শুধু অভাব অনাহার চলছে৷গত এক সপ্তাহ আগেও বিশালগড়ে জন্মদাতা মা তার সন্তান বিক্রি করতে নিয়ে এসেছিল৷ ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দর কষাকষি হয়েছে৷ কোন কাজ হচ্ছে না শুধু ক্ষমতায় বসে লুন্ঠন করছে বিজেপি ও আইপিএফটি জোট সরকার বলে অভিযোগ তুলেন মানিক সরকার৷ মনিপুর প্রসঙ্গে বলেন, মনিপুর যখন জ্বলছে তখন প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে যেতে পারছেন না৷ এর পেছনে গুমোর হলো বোতল থেকে দ্বৈত বের করেছে, এখন ঢুকাতে পারছেনা৷ শেষ পর্যন্ত বিরোধীরা পার্লামেন্টে অনাস্থা আনছে বলে সমালোচনা করেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করে আরো বলেন, তিনি মানুষকে মানুষ বলে মনে করেন না, দলকে দল বলে মনে করেন না৷ যেভাবে কাশ্মীর শেষ করেছে সেভাবেই মনিপুর শেষ করার চেষ্টা করছে৷ এবং তাদের দৌলতে গুজরাটেও দাঙ্গা হয়েছিল৷ মানুষ সব দেখছে৷ ছেড়ে দেবে না দেশবাসী বললেন তিনি৷ এবং এদিনের আয়োজিত হলসভায় পলিটব্যুরোর সদস্য বলেন ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল উপজাতি গণমুক্তি পরিষদ৷ সেই ইতিহাসকে বিকৃত করে বর্তমানে তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে৷ আর এই বিভ্রান্ত করার প্রয়াস শুরু হয়েছিল ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে৷ উপজাতি গণমুক্তি পরিষদের এই আন্দোলনকে পেছন থেকে ছুরি মারার গভীর ষড়যন্ত্র  করা হয়েছিল৷ করা হয়েছিল বিশ্বাসঘাতকতা৷ এর জন্য রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার প্রকাশ্য দায়ী করলেন কংগ্রেসকে৷ তিনি বলেন কংগ্রেস উপজাতিদের দুই নম্বর তিন নম্বর নাগরিক হিসেবে মনে করতো৷ উপজাতি এবং অপজাতিদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি  করেছিল কংগ্রেস৷ ১৯৬৭ সালে গঠন করা হয়েছিল উপজাতি যুব সমিতি৷ কংগ্রেস ছিল এর মস্তিষ্কপ্রসূত৷ রাজবাড়ীতে বসে পরামর্শ করে উপজাতি যুব সমিতি গঠন করা হয়েছিল৷ এই কনভেনশনে দিন বক্তব্য রাখেন সিপিআইএম -এর রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী, এডিসি -র প্রাক্তন মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য রাধাচরণ দেববর্মা, প্রাক্তন মন্ত্রী অঘোর দেববর্মা প্রমুখ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *