মুরারইয়ে জনসভা থেকে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ শুভেন্দুর

মুরারই, ৯ এপ্রিল (হি.স.) : বীরভূমের মুরারাইয়ে জনসভা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বীরভূম থেকে তৃণমূল হটানোর ডাক তুললেন তিনি। একই সঙ্গে গরুপাচার মামলায় গ্রেফতা হয়ে দিল্লির তিহাড় জেলে থাকা অনুব্রত মণ্ডলকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। এদিনের সভা থেকে শুভেন্দু প্রশ্ন তোলেন, ‘বীরভূমের বীর কোথায়’?

বীরভূমের মুরারইয়ে জনসভা থেকে এদিন একনাগাড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যান। সরাসরি অনুব্রতকে নিশানা করে বলেন, “কোথায় কেষ্ট মণ্ডল? বীরভূমের বীর কোথায়? কেষ্টবাবু কোথায় এখন? চড়াম চড়াম ঢাকের আওয়াজ, নকুলদানা, উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে, মনোনয়ন জমা দিতে দেব না, গুড় বাতাসা খাওয়াব বলা কেষ্ট মণ্ডল কোথায়? কেষ্টর নিচে যাঁরা কাজ করতেন, সেই বিনয় ঘোষ, ভগৎভাই, আসগর আলি, আর এক আলি, এই চারটে বড় চোর এখানকার। আরও আছে কি?”

আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এ দিন শুভেন্দু বলেন, “তিন গুণ করে টাকা তুলছে। অত্যাচার চলছে গরিবের উপর। অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আপনারা সবাই মিলে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল নামের জঞ্জালটিকে বহিষ্কার করুন। বীরভূমের সাংগঠনিক জেলায় গত একবছর এই নিয়ে ১৩ বার এলাম। কথা দিচ্ছি, ২০১৮ সালে যে ভাবে ভোট লুঠ করা হয়েছিল, এ বার তা হতে দেব না আমরা।”

শুভেন্দুর দাবি, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ভুল বুঝিয়েছিল তৃণমূল। নইলে বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারত বলেও এ দিন দাবি করেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, “সংখ্যালঘুদের পরিষ্কার বলব, ২০২১ সালে আপনাদের ভুল বোঝানো হয়েছিল। নইলে এখানে বিজেপি আসত। সংখ্যালঘুদের বলা হয়েছিল, বিজেপি এলে এনআরসি হবে। তাড়িয়ে দেওয়া হবে বাংলা থেকে। আপনারা বলুন, উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ কত জন সংখ্যালঘুকে তাড়িয়েছেন? ২৭ বছর গুজরাতে রয়েছে বিজেপি। অসমে আমাদের সরকার রয়েছে। কত জন সংখ্যালঘুকে তাড়ানো হয়েছে?”

বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের প্রতি বিজেপি-র সুর নরম হয়েছে বলে ইদানীং কালে শোনা যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। এ দিন শুভেন্দুর গলাতেও সেই সুর ধরা পড়ে। তিনি বলেন, “এই দেশের মাটিতে জন্মেছেন যাঁরা, এই মাটিকে নিজের ভাবেন যাঁরা, এখানেই যাঁদের সব, তাঁদের সঙ্গে কোনও বিরোধ ছিল না আমাদের, আজও নেই।”
শুভেন্দু এ দিনও ‘নো ভোট টু মমতা’ স্লোগান তোলেন। বলেন, “আবাস যোজনার টাকাও লুঠ হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না বাংলার মানুষ। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে দিয়েছে রাজ্য। শৌচালয়ের টাকাও চুরি করেছে তৃণমূল। বগটুইয়ে এতগুলো মানুষকে পুড়িয়ে মারল। আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাড়িতে ঢুকে দেননি মৃতদের পরিবার। পঞ্চায়েত ভোটে বুথ রক্ষা করতে হবে। হারাতে হবে তৃণমূলকে।”