শিলচর (অসম), ২৭ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : কাছাড় জেলার ধলাই থানার অধীনস্থ মিজোরাম সীমান্তবর্তী লায়লাপুরে আজ মঙ্গলবার সকালে পুলিশের নাকা চেকিঙের সময় পাচারের পথে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিরল প্রজাতির দুটি শিম্পাঞ্জি। তবে পাচারকারীরা গা ঢাকা দিতে সক্ষম হয়।
এ সম্পৰ্কে শিলচরে কাছাড়ের পুলিশ সুপার নোমাল মাহাতো জানান, শিলচর-আইজল জাতীয় সড়কের মিজোরাম আন্তঃরাজ্য সীমান্তবর্তী লায়লাপুরে পুলিশের রুটিন নাকা চেকিঙের সময় একটি গাড়িতে বড় দুটি ব্যাগ নড়াচড়া করছে দেখে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত পুলিশের। পরে তালাশি করে দুটি ব্যাগের ভেতরে পিঞ্জিরাবন্দি বিরল প্রজাতির দুটি শিম্পাঞ্জি পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক পিঞ্জিরা সহ শিম্পাঞ্জি দুটোকে বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।
পুলিশ সুপারের ধারণা, বহুমূল্যের দুষ্প্রাপ্য বন্য প্রাণীগুলো পার্শ্ববর্তী মায়ানমার কিংবা ইন্দোনেশিয়া থেকে মিজোরাম হয়ে ভারতে প্রবেশ করে অন্যত্র পাচারের উদ্দেশ্য নিয়ে আসছিল দুষ্কৃতীরা। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে এ ধরনের বেআইনি পাচারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বড়সড় মাফিয়া চক্র জড়িত রয়েছে বলে সন্দেহ তাঁদের। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের সংশ্লিষ্ট ধারায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পাচারচক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত অভিযান শুরু করেছে পুলিশ, জানিয়েছেন পুলিশ সুপার নোমাল মাহাতো।
তিনি জানান, বাজেয়াপ্তকৃত বিরল প্রজাতির শিম্পাঞ্জি দুটো বন বিভাগের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। বন বিভাগের তরফে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর বড়াইল অভয়ারণ্যের গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে বিভাগীয় সূত্রে জানা গেছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত কিছুদিন থেকে বহিঃরাষ্ট্র থেকে ভারতে দুষ্প্রাপ্য বন্যপ্রাণী পাচারে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। মিজোরাম পুলিশের এক দল গত ২৪ সেপ্টেম্বর মারুতি ওয়াগন-আর-এ তালাশি চালিয়ে পাচারের হাত থেকে ১৯টি বিদেশী বন্যপ্রাণী প্রজাতির ছয়টি গিবন, তিনটি ছোট বানর এবং ১০টি সরীসৃপ উদ্ধার করেছিল। এর সঙ্গে অসমের কাছাড় জেলার চান্নিঘাটের রফিক উদ্দিন লস্করের ছেলে বিরহান উদ্দিন লস্কর (২৪) এবং তার তিন সহযোগী করিমগঞ্জের মোশাহিদ আলীর ছেলে কামাল হুসেন (৩৪) ও কাছাড় জেলার ভাগাবাজারের আতাবুর রহমানের ছেলে আব্দুল রৌফ (২৫) ও বসির আলির ছেলে নিয়াজ হোসেন (২১)-কে গ্রেফতার করা হয়।
এর কয়েকদিন আগে ১৭ সেপ্টেম্বর মিজোরামের খাওজাল থানার অধীন তুইসেনফাই চেকগেটে বিদেশী বন্যপ্রাণীর অবৈধ চোরাচালান ভেস্তে দিয়েছে ওই রাজ্যের পুলিশ। চেকগেটে চার চাকার একটি গাড়িতে তালাশি চালিয়ে বিদেশি প্রজাতির স্পাইডার মাঙ্কি (একটি বাচ্চা সহ মহিলা) এবং একটি ইন্দ্রি লেমুরকে তাঁরা পাচারকারীদের কবল থেকে উদ্ধার করেছেন। এর সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল চাম্পাই জেলার দুই বাসিন্দা যথাক্রমে ভ্যানলালরোসিয়ামা (২৫) এবং সি লিয়ানকুঙ্গা (৫২)-কে।
উল্লেখ্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত ২৯টি চিতাবাঘের বাচ্চা, ৩৮টি লাল পায়ের কচ্ছপ, তিনটি অ্যালবিনো ইগুয়ানা এবং দুটি অজগর সহ কমপক্ষে ৯৪টি বিদেশি প্রজাতির বন্যপ্রাণী মিজোরামে উদ্ধার করা হয়েছে।

