নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ সেপ্টেম্বর : উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরে বৃহস্পতিবার আমরা বাঙালির পক্ষ থেকে দলের কর্মী সমর্থকরা ধর্মনগরে ছয় দফা দাবি সনদ জেলাশাসক নাগেশ কুমার বি এর কাছে প্রদান করে৷ এই দাবি সনদকে কেন্দ্র করে আমরা বাঙালি দলের কর্মী সমর্থকরা ধর্মনগরে একটি রেলি প্রদর্শন করে৷ রেলির শেষে এক সভায় মিলিত হয় এবং ছয় দফা দাবি সনদ নিয়ে এক প্রতিনিধি দল জেলা শাসকের কাছে গিয়ে প্রদান করে৷ তাদের অভিযোগ রাজ্যে বিজেপি আইপিএফটি জোট সরকার নির্বাচনোত্তর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে৷ কিন্তু তারা সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত করেনি৷ এই প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্যে রয়েছে পঞ্চাশ হাজার যুবক যুবতিদের বিভিন্ন দপ্তরে চাকুরী দেওয়া, ৩৫০০ জন টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীর চাকরির সুনিশ্চিত করা ,১০ ৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ,বিমানবন্দর সহ সরকারি ক্ষেত্রে বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া, মিজো রিয়াং শরণার্থীদের দ্বারা বাঙ্গালী অধ্যুষিত এলাকায় বাঙালি জনগনদের উপর অত্যাচার বন্ধ করা৷ ডেপুটেশন শেষে সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে আমরা বাঙালি দলের পক্ষে এক নেতৃত্ব বলেন বর্তমান সরকার নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু সরকার কোন প্রতিশ্রুতি পালন করেনি ,তাই সরকার যেন শীঘ্রই এই প্রতিশ্রুতি পালন করে এই লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে জেলা শাসকের কাছে দাবি সনদ প্রদান করা হয়৷ বলা হয় বিভিন্নভাবে বাংলাভাষাকে বিলুপ্তি করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে বর্তমান রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার৷ বর্তমানে যেখানে রাষ্ট্রসংঘ বাংলা ভাষাকে চতুর্থ ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সেক্ষেত্রে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্রে এবং বিমানবন্দর, রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাংলা ভাষাকে বিলুপ্ত করে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে বাঙালি জাতিকে বিলুপ্ত করার ক্ষেত্রে৷ ১৯৯৭ সালে মিজো রিয়াং শরণার্থী ত্রিপুরা রাজ্যে আসে৷ মানবিকতার খাতিরে তাদের আশ্রয় দেওয়া প্রয়োজন কিন্তু ভাবার বিষয় যেখানে মিজোরাম ভারতবর্ষের একটি অঙ্গরাজ্য এবং মিজোরামের ভৌগলিক আয়তন ২০ হাজার ৮৭ বর্গ কিলোমিটার এবং তার লোকসংখ্যা প্রায় ১১ লক্ষ সেক্ষেত্রে ছোট্ট পাহাড়ি রাজ্য ত্রিপুরার আয়তন ১০৪০০ বর্গ কিলোমিটার এবং তার লোক সংখ্যা প্রায় ৪০ লক্ষ অথচ এই বিপুল জনসংখ্যা বিশিষ্ট রাজ্যে মিজো রিয়াং শরণার্থীদের নিজেদের রাজ্যে এত বিস্তৃত ভৌগোলিক আয়তন সত্বেও ত্রিপুরাতে পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং রিয়াংশার্থীদের প্রত্যেককে ৭ লক্ষ ৮ লক্ষ করে সরকারি সাহায্য দেওয়া হচ্ছে৷ অথচ যেখানে এই মিজো রিয়াং শরণার্থী দ্বারা আমাদের রাজ্যের নাইর্সিং পাড়া ,আনন্দবাজার সহ বিস্তৃত অঞ্চলে বাঙালি পরিবারগুলি তাদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে৷বাঙালি পরিবারগুলোর সবর্োচ্চ ভেঙ্গে তছনছ করে দেওয়া হচ্ছে ,তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করা হচ্ছে৷ অথচ সরকার নিরব ভূমিকা পালন করছে ৷সরকারের এই বিমাতৃ সুলভ আচরণকে জনসম্মুখে তুলে ধরার জন্যই তাদের এই কর্মসূচি বলে জানান উপস্থিত নেতৃত্বরা৷
2022-09-23