Agartala to Kolkata via Dhaka Bus Service: আগরতলা থেকে কলকাতা ভায়া ঢাকা বাস পরিষেবা পুণরায় চালু, প্রথমদিনে যাত্রী ২৮ জন

আগরতলা, ১০ জুন (হি. স.) : করোনার প্রকোপ এবং প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে আগরতলা থেকে কলকাতা ভায়া ঢাকা যাত্রী বাস পরিষেবা পুণরায় চালু হয়েছে। তাতে ১৯ ঘণ্টায় আগরতলা থেকে কলকাতা পৌছে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। আজ প্রথম দিনে ২৮ জন যাত্রী ওই বাসে চড়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২২ জন ভারতীয় এবং ৬ জন বাংলাদেশী রয়েছেন। যাত্রীদের অধিকাংশই বাংলাদেশে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছেন। এই বাস পরিষেবার সূচনা করে পরিবহণ মন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায় বলেন, ত্রিপুরায় যোগাযোগের ক্ষেত্র প্রসারিত হয়েছে। রেলপথে ত্রিপুরা বিচ্ছিন্ন হওয়ার মুহুর্তে এই পরিষেবায় ত্রিপুরাবাসী অনেকেই উপকৃত হবেন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৩ মার্চের পর থেকে করোনা মহামারির জেরে ওই বাস পরিষেবা বন্ধ ছিল। পুণরায় চালুর ক্ষেত্রে বিভিন্ন আইনি জটিলতা কাটিয়ে অনুমতি সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা ছিল। ত্রিপুরা সরকারের পরিবহণ দফতর গত ১২ এপ্রিল আগরতলা থেকে কলকাতা ভায়া ঢাকা বাস পরিষেবা চালু করার অনুমতি প্রদান করেছিল। সে মোতাবেক সমস্ত আয়োজন করা হয়েছিল। গত ২৮ এপ্রিল বাস পরিষেবা শুরুর প্রস্তুতি নিয়েও শেষ মুহুর্তে আটকে গিয়েছিল। দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমতি সঠিক সময়ে না পৌছেনি, তাই ওইদিন পরিষেবা চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে, শীঘ্রই সমস্ত জটিলতা কাটিয়ে বাস পরিষেবা পুন: চালু করা হবে বলে ত্রিপুরা সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।

সে মোতাবেক, আজ আগরতলা থেকে কলকাতা ভায়া ঢাকা বাস পরিষেবা পুণরায় চালু হয়েছে। পরিবহণ মন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায় ওই পরিষেবার সূচনা করেছেন। এদিন পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার এক ও অভিন্ন হৃদয়। ভাষা, পোশাক, কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবেতেই মিল রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় ত্রিপুরায় যোগাযোগ ক্ষেত্র বিরাট প্রসারিত হচ্ছে। সড়ক পথে সাবরুম দিয়ে ত্রিপুরা বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হচ্ছে। রেলপথে যোগাযোগ এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। খুব শীঘ্রই জলপথেও ত্রিপুরা জুড়তে চলেছে বাংলাদেশের সাথে। ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিমান যোগাযোগও খুব শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে, দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে বলেন তিনি।

তাঁর কথায়, যোগাযোগ ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করার জন্য দুই দেশের সমন্বয় খুবই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আগরতলা থেকে কলকাতা ভায়া ঢাকা বাস পরিষেবা ত্রুটিমুক্ত রাখার জন্য পরিচালকদের উদ্দেশ্যে অনুরোধ জানান তিনি। সাথে ভারত ও বাংলাদেশের যাত্রীদের কাছেও দুই দেশের সম্পর্ক অটুট রাখতে সহায়তার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

এদিনের অনুষ্ঠানে পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, করোনার জেরে ওই পরিষেবা বন্ধ ছিল। এখন পুণরায় চালু হওয়ায় পর্যটন ক্ষেত্রে ত্রিপুরা দারুণভাবে উপকৃত হবে। আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহম্মদ বলেন, ওই বাস পরিষেবা দুই দেশের মৈত্রীর প্রতীক। পুণরায় চালু হওয়ায় দুই দেশের মানুষ প্রিয়জনদের সাথে সহজে দেখা করতে পারবেন। সাথে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নতিও হবে। ত্রিপুরা সড়ক পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেশ কুমার দাস বলেন, আগরতলা থেকে কলকাতার ভাড়া ২২০০ টাকা এবং আগরতলা থেকে ঢাকার ভাড়া ৯০০ টাকা। ওই বাসে সফরের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট থাকা বাধ্যতামূলক। সম্পূর্ণ বাতানুকূল ওই বাসে যাত্রীরা সফর দারুন উপভোগ করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।এদিন ওই বাসে ঢাকা যাচ্ছেন আগরতলার বাসিন্দা টিংকু কুমার সাহা বলেন, দুই বছর পর বাংলাদেশে আত্মীয়দের সাথে দেখা করার সুযোগ হয়েছে। তাই, বাস পরিষেবার প্রথম দিনেই টিকিট কেটেছি। আজ যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে, অধিকাংশই বাংলাদেশ বেড়াতে যাচ্ছেন এবং ওই বাস পরিষেবা পুণরায় শুরু হওয়ায় তাঁরা ভীষণ উপকৃত হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *