আগরতলা, ১৭ মার্চ (হি. স.) : ত্রিপুরা বিধানসভায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক ভাতা প্রাপকদের জন্য বড় ঘোষণা দিয়েছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার। আগামী দূর্গা পূজার আগেই সমস্ত সামাজিক ভাতা প্রাপকরা দুই হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। বাজেটে এমনই প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী জিষ্ণু দেব্বর্মা। শুধু তাই নয়, নতুন করে কর না চাপিয়ে জনগনের কাঁধে বোঝা বাড়ানোর পথে হাঁটেনি ত্রিপুরা সরকার। আজ অর্থমন্ত্রী জিষ্ণু দেব্বর্মা ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য ২৬৮৯২.৬৭ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছেন। এবারের বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সবেতেই বরাদ্দ বৃদ্ধি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, উপমুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা আজ ত্রিপুরা বিধানসভায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ২৬৮৯২.৬৭ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছেন। এই বরাদ্দ ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দের তুলনায় ১৮.৩৪ শতাংশ বেশি। বাজেটে ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৫৬৯.৫২ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দে নতুন কোনও করের প্রস্তাব করা হয়নি। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বড় মাপের বিনিয়োগের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মূলধনী ব্যয়ের পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৫,২৮৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এই পরিমাণ ছিল ২,৬৫১ কোটি টাকা। উপমুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন মুলধনী ব্যয়ের মাধ্যমে ত্রিপুরার আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার (জিএসডিপি) আগামী অর্থবছরে ১৩.২৮ শতাংশ পৌঁছবে।এদিন বিধানসভায় বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, এই বাজেট প্রস্তাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৫,০২৬ কোটি টাকা, যা ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবের তুলনায় ২০.৬৬ শতাংশ বেশি। এছাড়াও ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ১,৭৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি।
তাঁর দাবি, জনগণের আশা পূরণে বিভিন্ন পরিকাঠামো ও উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেওয়ার জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে ‘সুবর্ণ জয়ন্তী ত্রিপুরা নির্মাণ যোজনা’ নামে একটি নতুন প্রকল্প চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। তিনি বলেন, ত্রিপুরার ইতিহাসে এই প্রথম সামাজিক ও আর্থিক পরিকাঠামো তৈরির জন্য রাজ্য সরকার বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করবে।
অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দে সবচেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে শিক্ষা ক্ষেত্রে। এই ক্ষেত্রে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৮.৪৮ শতাংশ। গ্রামোন্নয়ন ক্ষেত্রে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯.৯১ শতাংশ। স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ ক্ষেত্রে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬.৫৪ শতাংশ। কৃষি এবং এর সঙ্গে যুব ক্ষেত্রে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫.৩৩ শতাংশ। এবারের বাজেট প্রস্তাবকে উন্নয়নমুখী বাজেট হিসেবে অভিহিত করে উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার মুখে যা বলে তা রূপায়ণ করা দেখায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব এর জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সামাজিক ভাতার পরিমাণ দুই হাজার টাকা বৃদ্ধি করার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তার সুফল ভাতা প্রাপকরা দুর্গা পূজার আগেই পেয়ে যাবেন। উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার গুণগত শিক্ষার প্রসারের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। এজন্য বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প চালু করা হয়েছে।তাছাড়াও এদিন অর্থমন্ত্রী বিধানসভায় ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দের দাবী পেশ করেছেন।

