বাণিজ্যিকভাবে কৃষিসামগ্রীর উৎপাদন বাড়াতে অ্যাগ্রি কমিশন গঠন করবে অসম সরকার : মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব নবনির্মিত ১০৭টি মডেল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উদ্বোধন

বাকসা (অসম), ১৩ জানুয়ারি (হি.স.) : রাজ্যের কৃষকরা যাতে বাণিজ্যিকভাবে তাঁদের কৃষি সামগ্রী উৎপাদন করতে পারেন, তার জন্য অসম সরকার এক অ্যাগ্রিকালচার কমিশন (কৃষি আয়োগ) গঠন করবে। কৃষি গবেষকদের নিয়ে গঠিত এই কমিশন গোটা রাজ্যের কৃষকরা যাতে বাণিজ্যিকভাবে কৃষিজাত সামগ্রী উৎপান বাড়িয়ে উপকৃত হন সে ব্যাপারে যথাযথ পরামর্শ দেবে। বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

আজ বৃহস্পতিবার বাকসা জেলার অন্তর্গত ককলাবাড়ির নবদিহিরায় ‘অ্যাগ্রো ফরেস্ট্রি অ্যান্ড বায়োডাইবার্সিটি কলেজ’ এবং ‘বেঙ্গল ফ্লোরিকান কনজারভেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ইকো ট্যুরিজম সাইট’-এর শিলান্যাস করে কথাগুলি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এগুলির শিলান্যাসের পাশাপাশি একই অনুষ্ঠানে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের এমজিএনরেগা তহবিলে নবনির্মিত ১০৭টি মডেল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

শিলান্যাস এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা আরও বলেন, ককলাবাড়ি কৃষি খামারের এক ঐতিহাসিক পটভূমি আছে। প্রায় ছয় হাজার বিঘা কৃষিজমির ওপর অবস্থিত এই কৃষি খামারের উন্নয়ন করতে বিটিআর প্রশাসন নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বর্তমান রাজ্য সরকার বিটিআর-এর পাশাপাশি গোটা রাজ্যের উন্নয়নকে এক নতুন দিগন্তে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। বলেন, রাজ্যের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি সম্পদ এবং সম্ভাবনাকে বিকশিত করতেও বহু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার। অসমে উপযুক্ত জলবায়ু রয়েছে। সে অনুযায়ী যতটুকু কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি হওয়ার কথা ছিল, তা হচ্ছে না। ফলে এখনও অসমে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য সামগ্রী আমদানি করতে হচ্ছে।

আবেগের সঙ্গে খেদ মিশিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির মেরুদণ্ড সোজা করার সময় হয়ে গেছে। কেননা, আজ এমন পর্যায়ে আমরা গিয়েছি যে, মাঘ বিহুর উরুকার সময়ও আমাদের বহিঃরাজ্য থেকে খাদ্য সামগ্রী কিনে আনতে হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি স্বাবলম্বিতার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আধুনিক কৃষির প্রতি সকলকে আকৃষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান।

ককলাবাড়ি কৃষি খামারকে জড়িয়ে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যত নির্মাণ করতে এখানে একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে বিটিআর প্রশাসন এবং অসম সরকার চেষ্টা করবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

আজকের অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন রাজ্যের হস্ততাঁত ও বস্ত্র শিল্পমন্ত্রী উর্খাও গৌরা ব্রহ্ম, বিটিআর-প্রধান প্রমোদ বড়ো প্রমুখ। ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তথা বিধায়ক জয়ন্তমল্ল বরুয়া, বিধায়ক যথক্রমে জুলেন দৈমারি, ভুপেন বড়ো, লরেন্স ইসলারি প্রমুখ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। বাকসার জেলাশাসকের স্বাগত ভাষণের পর সভার কাজ শুরু হয়।

সভার পর মানস জাতীয় উদ্যানের আধিকারিক-কর্মচারী, কনজারভেশন পার্টনার, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি জানান, রাজ্য সরকার ইকো-ট্যুরিজম, জীবিকা, অরণ্য সংরক্ষণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এর জন্য এক রোডম্যাপও তৈরি করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন মানস জাতীয় উদ্যানে দীর্ঘদিন ধরে পরিষেবা প্রদানকারী বেশ কয়েকজন ফরেস্ট গার্ড, ফরেস্টার প্রমুখের হাতে মানপত্র ও শংসাপত্র তুলে দিয়ে সম্মান জানান।