নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ ডিসেম্বর৷৷ রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী রতন লাল নাথের তুঘলকি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্র ছাত্রীরা টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরে৷ নবম এবং একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন তাতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷ ছাত্র-ছাত্রীরা কোন অবস্থাতেই ৮০ নম্বরের পরীক্ষায় বসবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়ে আন্দোলনে শামিল হয়েছে৷ঘটনা কৈলাসহরের মূল শহরের সেন্ট্রাল রোডে৷ ছাত্র ছাত্রীদের এই আন্দোলনে গোটা শহরে তীব্র আতংক ছড়িয়ে পড়ে৷ দুসরা ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটায় কৈলাসহর মহকুমার বিভিন্ন সুকলের নবম এবং একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীরা একত্রিত হয়ে কৈলাসহরের মূল শহরের সেন্ট্রাল রোড এলাকায় বড় বড় টায়ার আগুনে পুড়িয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে৷ বিক্ষোভকারী ছাত্র ছাত্রীরা জানায়, শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে বছরের প্রথম থেকেই প্রতিটি সুকলে ষান্মাসিক পরীক্ষার জন্য চল্লিশ মার্কের উপর ভিত্তি করেই পড়াশোনা করানো হয়েছিল৷
কিন্তু হঠাৎ করে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী রতন লাল নাথ গত ত্রিশ নভেম্বর ঘোষণা দেন আগামী পাঁচ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যের প্রতিটি সুকলে নবম এবং একাদশ শ্রেণীর ষান্মাসিক পরীক্ষা শুরু হবে এবং এই পরীক্ষা আশি নম্বরের হবে৷ ছাত্র ছাত্রীরা আরও জানায় যে, ছাত্র ছাত্রীদের কথা চিন্তা না করে এমনকি ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে শিক্ষা মন্ত্রী যে তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা যতক্ষন অব্দি পরিবর্তন করা হবে না ততক্ষণ অব্দি এই রাস্তা অবরোধ এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন জারী থাকবে৷ ছাত্র ছাত্রীরা আরও ক্ষোভের সাথে জানান যে, বলা হচ্ছে আশি নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে পাঁচ ডিসেম্বর থেকে৷আর শিক্ষা মন্ত্রী রতন লাল নাথ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরীক্ষা নেওয়ার চার দিন পূর্বে৷ রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী হয়ে উনি ছাত্র ছাত্রীদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত কিভাবে নিলেন? তাছাড়াও ছাত্র ছাত্রীরা বলে যে, সারা বছর সুকলে চল্লিশ নম্বরের উপর পরীক্ষা নেওয়া হবে এর ভিত্তিতেই পড়াশোনা করানো হয়েছে৷ পরীক্ষার চারদিন পূর্বে হঠাৎ করে শিক্ষা মন্ত্রী রতন লাল নাথ জানিয়ে দিলেন পরীক্ষা হবে আশি নম্বরের৷ চার দিনের মধ্যে প্রতিটি বিষয়ের সিলেবাস শেষ করা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়৷ সকাল এগারোটা থেকে কৈলাসহর থানার নাকের ডগায় রাস্তা অবরোধ শুরু হলেও পুলিশ অবরোধ স্থলে আসে একঘন্টা পর৷
পুলিশের এই কান্ডজ্ঞানহীন কাজের ফলে বিক্ষোভরত ছাত্র নেতারা টায়ার আগুনে পুড়ানোর সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে তুমুল বাকবিতণ্ডাও হয়৷ অবরোধের প্রায় দুই ঘন্টা পর অবরোধ স্থলে আসেন ঊনকোটি জেলা শিক্ষা আধিকারিক প্রশান্ত কিলিকদার, সুকল পরিদর্শক বেনী মাধব চক্রবর্তী সহ আরও অন্যান্য আধিকারিকরা৷ বিক্ষোভ রত ছাত্র ছাত্রীদের সাথে দীর্ঘক্ষন আলোচনা করার পরও ছাত্র ছাত্রীরা তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত না হওয়াতে জেলা শিক্ষা আধিকারিক প্রশান্ত কিলিকদার ছাত্র ছাত্রীদের অনুরোধ করেন তাদের দাবি নিয়ে একটি দরখাস্ত উনার কাছে দেওয়ার জন্য৷ উনি এটা রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে পাঠাবেন৷

