নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ জুলাই।। বিশালগড় নিউমার্কেটে পরপর চুরির ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের হাতে আটক হয়েছে এক কুখ্যাত চোর। তাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। উইকেন্ড কারফিউ ও লকডাউন চলাকালে বিশালগড় সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে চুরির ঘটনা উপর্যপরি বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। দোকানপাট ও বাড়িঘরে হাতসাফাই করছে চোরেরা। একাংশ যুবক নেশার টাকার যোগান নিশ্চিত করার জন্য চুরির ঘটনায় জড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। এসব চুরির ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে সৃষ্টি হয়েছে।
পরপর এসব ঘটনায় মানুষের মধ্যে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সুন্দরভাবে চালিয়ে নেওয়া রীতিমত কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এতদিন বিশালগড় নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সকাল ছয়টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত চালিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অনেক দিকে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ।সেদিকে চিন্তা করে বিশালগড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতি সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সমস্ত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। সেই সুবাদে বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তাদের দোকানের জন্য প্রচুর পরিমাণে মাল আমদানি করছেন দোকানে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিনিয়ত চোরের দল হানা দিচ্ছে বিশালগড় নিউমার্কেটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
প্রতিনিয়ত বিশালগড় নিউমার্কেটে পাহারাদার থাকা সত্ত্বেও এই চোরের দল তাদের চোখে ফাঁকি দিয়ে চুরি করে সর্বশান্ত করে দিচ্ছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিকদের। কিছুদিন পূর্বে বিশালগড় নিউমার্কেটে মুদি ব্যবসায়ী স্বপন সাহার দোকানে চুরি করে সর্বশান্ত করে দেয় চোরের দল। তারপর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রতন দেব, বাজার সম্পাদক বাবুল সাহা সহ কমিটির অন্যান্য লোকেরা সেই দোকান পরিদর্শন করে যান এবং তাদেরকে আশ্বাস দেন আগামী দিনে পাহারাদারদের কোনরকম অবহেলার কারণে যদি বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কোনো রকম চুরি হয় তাহলে এ বিষয়টি উনারা দেখবেন। কিন্তু তারপরও চোরের দল চুরি করা বন্ধ রাখে নি। অবশেষে বাধ্য হয়ে বিশালগড় নিউমার্কেটের সমস্ত বাজার ব্যবসায়ীরা সোমবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ব্যবসা চালাবার পর একযোগে মিলিত হয়ে মিটিং করেন ।
মিটিং এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার রাতে সমস্ত ব্যবসায়ীরা বিশালগড় বাজার এর সমস্ত দোকান পাহাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সে মোতাবেক সমস্ত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক রাতে বাড়ি থেকে খাওয়া দাওয়া করার পর বিশালগড় নিউমার্কেট বাজারে চলে আসেন । বিভিন্নশুরু হয় তাদের বাজারের নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্টানে পাহারা দেওয়ার কাজ। অন্যদিকে চোরের দল সে খবর না জেনেই বিশালগড় বাজারে চুরি করার জন্য প্রতিনিয়ত ঘুরাফেরা করতে থাকে। সারারাত্র কাটিয়ে চোরের দল মঙ্গলবার ভোররাতে নিউমার্কেটে মুদি ব্যবসায়ীর দোকান থেকে রানী সরিষার তেলের কার্টুন নিয়ে এবং সবজি ব্যবসায়ী মরিচের বস্তা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় পাহারারত ব্যবসায়ীর হাতে ধরা পড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা প্রথমেই চোরকে আটক করার পর উত্তম মাধ্যম দেন এবং বাজারের কর্তব্যরত সমস্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ঘটনাস্থলে নিয়ে আসেন। পরবর্তী সময়ে ব্যবসায়ীরা বিশালগড় থানায় খবর পাঠান ।থানার পুলিশ আসার পর আটক চোর জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে প্রত্যেকটি চুরির ঘটনায় সে জড়িত রয়েছে । আটক চোরের নাম সুলতান মিয়া।
বিশালগড় নিউ মার্কেট প্রায় ২০ থেকে ৩০ টি দোকানে চুরি করেছিল বলে নিজ মুখে স্বীকার করে। বিশালগড় থানা থেকে ছুটে আসেন এ এস আই দারগা দেববর্মা। আটককৃত চোরকে নিয়ে যান বিশালগড় থানায়। অন্যদিকে বিশালগড় নিউমার্কেটে নাইট গার্ডদের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে বিভিন্ন প্রশ্ন। যদি বিশালগড় বাজারে নাইট গার্ড সঠিক দায়িত্ব পালন করে নি বলে এক আর করে এক চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আজ বিশালগড় নিউমার্কেটের সমস্ত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মালিকরা এই নাইট গার্ডেদের সতর্ক করে দেন আগামী দিনে যদি এরকম চুরি সংঘটিত হয় তাহলে তার দায়ভার নাইট গার্ডেদের নিতে হবে।