নয়াদিল্লি, ১৪ ডিসেম্বর:
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতর (পিএমও) রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার লেখা একটি প্রবন্ধ শেয়ার করে নাগাল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী হর্নবিল উৎসবের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। পিএমও একে ভারতের সাংস্কৃতিক আত্মার প্রাণবন্ত প্রকাশ এবং জাতীয় প্রেক্ষাপটে উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের প্রতীক বলে উল্লেখ করেছে।
এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ দেওয়া পোস্টে পিএমও জানায়, এই প্রবন্ধে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া নাগাল্যান্ডের হর্নবিল উৎসবকে মানব আত্মার এক বর্ণিল ক্যালাইডোস্কোপ এবং প্রাচীন ও আধুনিকের দক্ষ মিলনস্থল হিসেবে তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে তিনি পুনরুল্লেখ করেছেন যে, উত্তর-পূর্ব ভারত আলোকিত হলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
পিএমও আরও জানায়, উত্তর-পূর্ব ভারত আজ এক নতুন, আত্মবিশ্বাসী ভারতের মুখ। নাগাল্যান্ড শুধু উৎসব পালন করে না, বরং উদ্যাপনকেই জীবনের অঙ্গ করে তুলেছে—এই কারণেই রাজ্যটি ‘উৎসবের দেশ’ নামে পরিচিত।
প্রবন্ধে সিন্ধিয়া লেখেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দৃষ্টিভঙ্গি উত্তর-পূর্ব ভারতকে ভারতের উন্নয়ন যাত্রার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে এবং এই অঞ্চলের বিপুল অর্থনৈতিক ও মানবসম্পদ সম্ভাবনাকে উন্মুক্ত করেছে। তাঁর কথায়, “নাগাল্যান্ডের হর্নবিল উৎসব এই রূপান্তরকে সাংস্কৃতিক কণ্ঠ দেয়, প্রমাণ করে যে পরিচয়ের ভিত্তিতে দাঁড়িয়েই উন্নয়ন সবচেয়ে শক্তিশালী হয়।”
উৎসবের চেতনাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিন্ধিয়া বলেন, নাগাল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদ, আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য, ক্রীড়া সংস্কৃতি, দক্ষতা, ইকো-ট্যুরিজম, খাদ্যসংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য শুধু কথার কথা নয়, বরং প্রতিদিনের জীবনে অনুভূত বাস্তবতা।
তিনি কিসামায় অনুষ্ঠিত হর্নবিল উৎসবকে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার শক্তিশালী মিলনস্থল হিসেবে বর্ণনা করেন। তাঁর লেখায় উঠে আসে, দিনের বেলা ১৭টি নাগা জনজাতির ঐতিহ্যবাহী গান ও নৃত্যে মুখরিত থাকত উৎসব প্রাঙ্গণ, আর সন্ধ্যায় প্রাণ পেত সমকালীন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। বিশেষ করে হর্নবিল ইন্টারন্যাশনাল রক কনটেস্টে দেশ-বিদেশের প্রতিভাবান ব্যান্ডগুলির অংশগ্রহণ উৎসবে আলাদা মাত্রা যোগ করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে সিন্ধিয়া বলেন, মোদীর ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির ফলে আসিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য করিডর খুলে গেছে, যা নাগাল্যান্ডকে আঞ্চলিক উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাঁর মতে, “এগুলি শুধু ইট-পাথরের অবকাঠামো নয়, বরং সমৃদ্ধির জীবনরেখা—যার ফলে ২০১৪ সালের পর থেকে এই অঞ্চলের জিডিপি চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।”
বিশ্বজুড়ে যখন সাংস্কৃতিক পরিচয়ের গুরুত্ব নতুন করে উপলব্ধি করা হচ্ছে, তখন হর্নবিল উৎসব ঐতিহ্যের উপর দাঁড়ানো ঐক্যের এক অনন্য উদাহরণ বলে মন্তব্য করেন সিন্ধিয়া। তিনি বলেন, এই উৎসব প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘বিকাশও, বিরাসতও’ মন্ত্রেরই প্রতিফলন—যেখানে উন্নয়ন ও ঐতিহ্য একে অপরের পরিপূরক হয়ে ভারতের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সাংস্কৃতিকভাবে দৃঢ় উন্নয়ন মডেলকে তুলে ধরে।

