চড়িলাম, ১৩ ডিসেম্বর :চড়িলাম আনন্দমার্গ স্কুলে শনিবার সকালে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ, বিশালগড় আনন্দমার্গ স্কুলের চেয়ারম্যান ননীগোপাল দেবনাথ এবং বহিষ্কৃত ইনচার্জ রাকেশ সরকার সকাল প্রায় ১১টা নাগাদ দলবল নিয়ে চড়িলাম আনন্দমার্গ স্কুলে হানা দেন। অনুমতি না নিয়েই বিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ ও উচ্চবাচ্য শুরু করেন বলে অভিযোগ।
বিদ্যালয়ের এই আচরণে আপত্তি জানিয়ে চড়িলাম আনন্দমার্গ স্কুলের চেয়ারম্যান চন্দন দেবনাথ এবং শিক্ষকরা প্রশ্ন তোলেন, কী কারণে তারা দলবল নিয়ে স্কুলে এসে এমন আচরণ করছেন। এরপরই দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র তর্কাতর্কি শুরু হয়, যা পরে হাতাহাতিতে রূপ নেয়।
জানা গেছে, সম্প্রতি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে চড়িলাম আনন্দমার্গ স্কুলের ইনচার্জ পদ থেকে রাকেশ সরকারকে সরিয়ে দেয় আনন্দমার্গ সংগঠনের কর্তৃপক্ষ। নতুন ইনচার্জ হিসেবে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক কৌশিক আচার্যকে নিয়োগ করা হয়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই ননীগোপাল দেবনাথ ও রাকেশ সরকার দলবল নিয়ে স্কুলে হামলা চালান বলে অভিযোগ।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চড়িলাম বাজার এলাকার বহু মানুষ ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশালগড় থানার পুলিশ।
এলাকার অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, ননীগোপাল দেবনাথ ও রাকেশ সরকার যদি কোনও অভ্যন্তরীণ সমস্যায় জড়িয়ে থাকেন, তাহলে স্কুল চলাকালীন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সামনে এমন হাঙ্গামা না করে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া উচিত ছিল। কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের সামনে এই ধরনের হামলা ও বিশৃঙ্খলা স্কুলের পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে মত তাঁদের।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, চড়িলাম আনন্দমার্গ স্কুলকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই একের পর এক সমস্যা চলে আসছে। বিগত প্রায় ২৫ বছরের স্কুল ইতিহাসে কখনও শিক্ষক ও স্কুল কমিটির মধ্যে, কখনও স্কুল কমিটি ও জমির মালিকের মধ্যে, আবার কখনও স্কুল কমিটি ও ইনচার্জের মধ্যে বিবাদ লেগেই রয়েছে।
চড়িলামে দ্বিতীয় কোনও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল না থাকায় বহু অভিভাবক বাধ্য হয়েই তাঁদের সন্তানদের এই আনন্দমার্গ স্কুলে ভর্তি করাতে বাধ্য হচ্ছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। অভিভাবকদের দাবি, দ্রুত স্থায়ী সমাধান না হলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

