ওড়িষ্যায় বাঙালি বসতিতে হামলা, প্রতিবাদে সরব আমরা বাঙালি

আগরতলা, ১১ ডিসেম্বর: ওড়িষ্যা রাজ্যের মালকানগিরি জেলার বালীরিগাঁওয়ে সম্প্রতি সংঘটিত হামলার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই ওড়িষ্যাসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ‘অনুপ্রবেশ’ ইস্যুকে কেন্দ্র করে বাঙালি সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাঙালিরা ভূমিপুত্র, স্বাধীনতা আন্দোলনের অবদানকারী ও বৈধ কাগজপত্রধারী হওয়া সত্ত্বেও হামলা-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মহলের। এরই প্রতিবাদে সরব হয়েছে আমরা বাঙালি রাজ্য কমিটি।

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আমরা বাঙালির সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল বলেন, ৭ ডিসেম্বর রাতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের একদল মানুষ অতর্কিতে বালীরিগাঁওয়ে হামলা চালায়। শতাধিক বাঙালি পরিবারের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং কোটি টাকার সম্পত্তি ধ্বংস হয় বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। লুটতরাজের ঘটনাও ঘটে।
অভিযোগ রয়েছে, পরদিন ৮ ডিসেম্বর পুলিশের সামনেই আবারও অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনা ঘটে, তবে পুলিশ নীরব ভূমিকা নেয়।

তাঁর কথায়, ওড়িষ্যায় বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাঙালিদের ওপর হামলা বেড়েছে। অন্যদিকে ৮ ডিসেম্বর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে চিত্রাকোন্ডার কংগ্রেস বিধায়ক মংগুখিলো বাঙালিদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন বলেও অভিযোগ ওঠে।

১৯৬৪ সালে ধর্মীয় সংখ্যালঘু বাঙালিরা মালকানগিরির বিভিন্ন এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। তিনি দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া বর্তমান ময়ূরগঞ্জ, কেওড়গঞ্জসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল একসময় বৃহত্তর বাংলার অংশ ছিল। কটক, ভুবনেশ্বরসহ বহু শহরে যুগ যুগ ধরে বাঙালিদের বসবাসের প্রমাণও রয়েছে। সেই সূত্রে নিজেদের ভূমিপুত্র দাবি করছেন স্থানীয় বাঙালিরা।

ওড়িষ্যায় নতুন করে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আমরা বাঙালি ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি। তিনি বলেন, ধারাবাহিকভাবে বাঙালিদের ওপর হামলা করা হচ্ছে এবং সাংবিধানিক অধিকারকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, মালকানগিরির সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে যুক্ত সকল অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালি পরিবারগুলোর পূর্ণ ক্ষতিপূরণ, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিজ নিজ স্থানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং বাঙালিদের ভাষা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় সংবিধানের ৩নং ধারা অনুযায়ী স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক–অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের দাবি জানানো হয়।

Leave a Reply