বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখে অপপ্রচার, তুলাশিখর ব্লকের দুই গ্রামে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ

আগরতলা, ১০ ডিসেম্বর: রাজ্যের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করার এক অদ্ভুত প্রবণতা দেখা দিয়েছে। বকেয়া বিলের দায় উল্টে বিদ্যুৎ নিগমের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার ঘটনাও সামনে এসেছে। তুলাশিখর ব্লকের আশারামবাড়ি এডিসি ভিলেজের নারায়ণ বস্তি ও লিঙ্গায়া বস্তির সাম্প্রতিক ঘটনা বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করেছে।

বিদ্যুৎ নিগম সূত্রে জানা গেছে, এই দুই এলাকায় মোট ৩৮ জন গ্রাহকের মধ্যে সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত নিয়মিত বিল পরিশোধ করেছেন মাত্র ২ জন। গোটা সাব-ডিভিশনে বিল পরিশোধের গড় হার যেখানে মাত্র ১৫ শতাংশ, সেখানে এ ধরনের পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। নিগমের কর্মীরা বহুবার গ্রামে গিয়ে অনুরোধ করলেও অধিকাংশ গ্রাহক তাতে সাড়া দেননি; বরং অভিযোগ, সুযোগ পেলেই কর্মীদের দোষারোপ করা হয়েছে।

গত অক্টোবরের শুরুতে এলাকার ২৫ কেভিএ ট্রান্সফরমারটি হঠাৎ বিকল হলে, অভিযোগ তোলার ক্ষেত্র তৈরি হয়। তবে বিদ্যুৎ নিগম সময় নষ্ট না করে পরদিনই অস্থায়ীভাবে ওই দুই এলাকাকে পার্শ্ববর্তী এলাকার এল.আই. স্কিমের ৬৩ কেভিএ ট্রান্সফরমারের সঙ্গে যুক্ত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখে। ফলে এক মুহূর্তও বিদ্যুৎ বন্ধ ছিল না। ৭ ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও ওইদিন বিকেলে অস্থায়ী ব্যবস্থার ৬৩ কেভিএ ট্রান্সফরমারটিও বিকল হয়ে যায়।

পরদিন, ৮ ডিসেম্বর, নিগমের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মেরামতির চেষ্টা করেন। প্রযুক্তিগত জটিলতা কাটানো সম্ভব না হওয়ায় সিদ্ধান্ত হয় ট্রান্সফরমার সম্পূর্ণ বদল করা হবে, এবং সেই কাজও শুরু হয়ে যায়। ঠিক এই সময়েই এলাকায় হঠাৎ প্রচার শুরু হয় যে “দুই মাস ধরে বিদ্যুৎ নেই।” কিছু সংবাদমাধ্যমও এই বিভ্রান্তির ফাঁদে পা দেয়।

পরবর্তীতে জানা যায়, এই অপপ্রচারের মূল উদ্দেশ্য ছিল বকেয়া বিল আদায় রোধ করা এবং পরিস্থিতি এমনভাবে তৈরি করা যাতে গ্রামবাসীদের মধ্যে বিদ্যুৎ নিগমের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ছড়ানো যায়।

বিদ্যুৎ নিগম জানিয়েছে, গোটা রাজ্যে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দ্রুত বিকল্প সংযোগ প্রদান, মাঠ পর্যায়ে উপস্থিত থাকা, এবং নতুন ট্রান্সফরমার বসানোর উদ্যোগ এসবই তাদের আন্তরিকতার প্রমাণ।

নিগমের আবেদন, পরিষেবা আরও উন্নত করতে গ্রাহকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। নিয়মিত বিল পরিশোধ করলে শুধু পরিষেবা বজায় থাকে না, বরং তা আরও শক্তিশালী হয়। কারণ বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে সচল রাখতে যেমন নিগম দায়বদ্ধ, তেমনি সমান দায়িত্ব গ্রাহকদেরও।

Leave a Reply