আগরতলা, ৯ ডিসেম্বর: মেলাঘর পৌরসভার ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আবাস যোজনা ঘর বরাদ্দকে ঘিরে বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ঘরপ্রাপ্ত বহু দরিদ্র পরিবার বাইক বিক্রি করে, অতিরিক্ত সুদে ঋণ নিয়ে কিংবা সম্পত্তি বিক্রি করে ঘর নির্মাণ করলেও এখনো পর্যন্ত সরকারি অনুদানের এক টাকাও পাননি।
সরকার গরিব মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করতে আবাস যোজনার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। কিন্তু সেই টাকা পঞ্চায়েত বা পৌরসভা স্তরে পৌঁছানোর পর আমলা থেকে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আত্মসাতের প্রতিযোগিতা চলছে বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের। এবারের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু মেলাঘর পৌরসভার ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড। আরমানের মাধ্যমে বরাদ্দ হওয়া এই দুই ওয়ার্ডের বহু আবাস যোজনা ঘরের মালিক আজ চরম দুর্দশায়।
ঘরপ্রাপকদের অভিযোগ, পৌরসভা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ধাপে ধাপে সমস্ত টাকাই ব্যাংকের মাধ্যমে ট্রান্সফার করা হবে। সেই আশ্বাসে বিশ্বাস করে অনেকে ঋণ, সুদ, এমনকি ব্যক্তিগত জমি বিক্রি পর্যন্ত করে ঘর তৈরি শুরু করেন। পৌরসভার পক্ষ থেকে বারবার ছবি ও কাগজপত্র জমা নেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত কেউ এক পয়সাও পাননি।
অনেক ঘরের নির্মাণ মাঝপথে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকার কারণে ঘরের খালি জায়গায় বড় গাছ–ঝোপ গজিয়ে উঠেছে, নোংরা আবর্জনায় তৈরি হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, পৌরসভায় গেলে বলা হয় টাকা নাকি ইতিমধ্যেই ঢুকে গেছে এবং ব্যাংকে ট্রান্সফার করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে তারা খালি হাতেই ফিরে আসেন। ফলে ক্ষোভ ও হতাশা দিন দিন বাড়ছে। ইতিমধ্যেই পৌরসভার বিভিন্ন দুর্নীতির খবর সমাজমাধ্যম থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রকাশ পাচ্ছে। এবার আবাস যোজনা নিয়েও নতুন করে বিতর্কে জড়ালো মেলাঘর পৌরসভা।
ঘরপ্রাপ্তরা সবাই নিম্ন আয়ের পরিবার। তাদের বক্তব্য, আমরা কোটিপতি নই। অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে ঘর তৈরি করেছি। এখনো টাকা না পাওয়ায় ঋণের বোঝায় জর্জরিত।
তাদের দাবি, অবিলম্বে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সরকারি অনুদান ব্যাংকের মাধ্যমে ট্রান্সফার করতে হবে যাতে তারা ঋণমুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন।

