জাতি জনজাতির কৃষ্টি সংস্কৃতি রক্ষায় রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ৮ ডিসেম্বর: কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও পরম্পরাই আমাদের স্বতন্ত্র পরিচয়। আজ উদয়পুরের নাতিনটিলায় আয়োজিত ২০তম রাজ্যভিত্তিক ওয়ানগালা উৎসবের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। তিনি বলেন, সারা দেশে প্রায় ৭০০ জনজাতি গোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করলেও ত্রিপুরায় রয়েছে ১৯টি জনজাতি গোষ্ঠী। তাঁদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পরম্পরাকে সুরক্ষিত রাখতে রাজ্য সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর, উদয়পুর মহকুমা প্রশাসন এবং ত্রিপুরা গারো ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের বর্তমান সরকার বিকশিত ত্রিপুরা এবং বিকশিত ভারতের লক্ষ্যে সকল সম্প্রদায়ের সার্বিক উন্নয়নে বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। শিক্ষা, রাস্তাঘাট, পানীয়জল, স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন পরিকাঠামোগত উন্নয়নে রাজ্য সরকার সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা সংগ্রামী ভগবান বীর বিরসা মুন্ডার জন্মদিনকে ‘জনজাতি গৌরব দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

ওয়ানগালা উৎসব প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গারো সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব এটি। এই উৎসব জাতি ও জনজাতির মিলন মেলা হিসেবে কাজ করে। গারো সমাজ এই উৎসবে তাঁদের কূলদেবতার পূজা করেন এবং নতুন ফসল ঘরে তোলেন। অনুষ্ঠানে গারো সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একটি দাবিনামা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন দাবিগুলি পরীক্ষা করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সম্মানিত অতিথি অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, ওয়ানগালা মেলার মাধ্যমে গারো সম্প্রদায়ের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে। রাজ্য সরকার গারো সহ সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অনুষ্ঠানে বিধায়ক ও মেলা কমিটির চেয়ারম্যান অভিষেক দেবরায়ও বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি দেবল দেবরায়, উদয়পুর পুরপরিষদের চেয়ারপার্সন শীতল চন্দ্র মজুমদার, গোমতী জেলার পুলিশ সুপার ডা. কিরণ কুমার কে., অতিরিক্ত জেলাশাসক ও সমাহর্তা সুভাষ আচার্য, মাতাবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান শিল্পী রাণী দাস এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সহ-অধিকর্তা অজয় দে প্রমুখ। ত্রিপুরা গারো ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পিন্টু চন্দ্র ঘাগড়া স্বাগত ভাষণ দেন এবং সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়নের সভাপতি সুভাষ মারাক। মেলায় মোট ৮টি উন্নয়নমূলক স্টল খোলা হয়েছে। পাশাপাশি উৎসবকে কেন্দ্র করে একটি স্মরণিকার আবরণও উন্মোচন করেন অতিথিগণ।

Leave a Reply