কৈলাসহর, ২৫ নভেম্বর: উত্তর ত্রিপুরার কৈলাসহরে ফের প্রকাশ্যে এল ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক সমীকরণ। রাজ্যের সামগ্রিক রাজনৈতিক উত্তাপের মাঝেও কৈলাসহরের রাজনীতিতে দেখা গেল ভিন্ন দৃশ্য। সিপিআইএমের সমর্থনে বিজেপির একজন পঞ্চায়েত সদস্য প্রধান নির্বাচিত হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। এই ঘটনার মধ্যেই আবারও সামনে এসেছে কৈলাসহর বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে গৌরনগর ব্লকের শ্রীনাথপুর ও ধলিয়ারকান্দি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কেন্দ্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকাল থেকে দুই পঞ্চায়েত কার্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে ইরানি থানার পুলিশ। ইন্সপেক্টর শ্রীকান্ত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশ, টিএসআর এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিলো।
তেরো আসনবিশিষ্ট শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ছয়জন বিজেপি, চারজন কংগ্রেস এবং তিনজন সিপিআইএম সদস্য রয়েছেন। পঞ্চায়েত অফিসার রাজীব দেববর্মা জানান, প্রধান নির্বাচনের সময় কংগ্রেসের চার সদস্যই অনুপস্থিত ছিলেন। সিপিআইএমের তিন সদস্যের মধ্যে দু’জন এবং বিজেপির ছয় সদস্য উপস্থিত ছিলেন। মোট আট সদস্যের সমর্থনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই বিজেপি সদস্য তুয়াকুল আলী প্রধান নির্বাচিত হন।
১১টি আসনবিশিষ্ট ধলিয়ারকান্দি গ্রাম পঞ্চায়েতে সাতজন বিজেপি এবং চারজন কংগ্রেস সদস্য রয়েছেন। সকল সদস্যের উপস্থিতিতে বীনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপির রেবা রানী নম: বিশ্বাস প্রধান এবং তুফাইল আহমেদ উপপ্রধান নির্বাচিত হন।
প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের পরেই বিজেপির দুই পঞ্চায়েত সদস্য—ফাতেমা বেগম ও সমিরুন নেছা—নির্বাচনকে ‘অবৈধ’ বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, খুব শীঘ্রই নতুন প্রধান-উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হবে। শ্রীনাথপুরে সিপিআইএমের সমর্থনে বিজেপি প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় কংগ্রেস ক্ষুব্ধ।
ঊনকোটি জেলা কংগ্রেস সভাপতি মো. বদরুজ্জামান তীব্র সমালোচনা করে বলেন, সিপিআইএম নেতারা মাঠে ঘাটে বলেন—কংগ্রেসই নাকি বিজেপির সম্পদ, কংগ্রেস নাকি বিজেপির ধূসর রং। তাহলে আজ সিপিআইএম কীভাবে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রধান নির্বাচিত করল?
তিনি আরও দাবি করেন, কৈলাসহর বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই অতীতে ধলিয়ারকান্দিতে অনাস্থা এসেছিল, এবং নতুন পঞ্চায়েত গঠনে ‘আনন্দের কিছু নেই। কৈলাসহরের এই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ ভবিষ্যতে পঞ্চায়েত পরিচালনায় কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।

