ধর্মনগরে আমরা বাঙালী সংগঠনের উদ্যোগে চার ঘণ্টার গণ অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

ধর্মনগর, ২৫ নভেম্বর: উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর শহরে ‘আমরা বাঙালী’ সংগঠনের উদ্যোগে চার ঘণ্টার গণ অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হল। মঙ্গলবার ধর্মনগর শহরের কেন্দ্রস্থলে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। সংগঠনের নেতৃত্বের অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে দেশজুড়ে বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামাজিকভাবে নানা ধরনের অবিচার ও বৈষম্য চলছে। বিভিন্ন আইন ও নীতির মাধ্যমে বাঙালীদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে বলেও দাবি সংগঠনের।

গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল জানান, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ করার প্রবণতা বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত বাঙালি স্বার্থবিরোধী বলে অভিযোগ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের। অসমসহ উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের ‘‘বাংলাদেশি’’ তকমা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে, জমি-জায়গা ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে এবং পুশব্যাকের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তুলে তারা। এছাড়া জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে মাতৃভাষা বাংলাকে গুরুত্বহীন করার চেষ্টার কথাও অভিযোগের তালিকায় উঠে আসে। বাংলা ভাষার পরিবর্তে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও বক্তব্য সংগঠনের।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত হিন্দু বাঙালিদের উপর নির্যাতন শুরু হয়েছিল। ত্রিপুরায় বিভিন্ন সময়ে শাসনকারী রাজনৈতিক দলগুলোর আমলে সেই নির্যাতন ও বৈষম্য আরও বেড়েছে। সিপিএম শাসনামলে বাঙালি গণহত্যা, খুন-অপহরণসহ বহু ঘটনা ঘটলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি তাদের। আবার বর্তমান বিজেপি সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার অভিযোগও তোলেন বক্তারা।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, রাজ্যে নেশা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ বর্তমান সরকার। তাছাড়া বাঙালিদের উপর হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনাও বাড়ছে, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলি উপজাতি ভোট হারানোর ভয়ে নীরব থাকছে বলেও বক্তব্য তাদের।

সংগঠনের নেতাদের দাবি, রাজনৈতিক দলগুলির উপর নির্ভরশীল হয়ে বাঙালি জাতির ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত নয়। তাই জাতিগত ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানানো হয় বিক্ষোভ মঞ্চ থেকে।
বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল, যুগ্ম ও প্রচার সচিব দুলাল ঘোষ, উত্তর ত্রিপুরা জেলা কমিটির সচিব জ্যোতিষ দেবনাথ, রাজ্য কমিটির সদস্য বিভাস দাস সহ সংগঠনের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা।